বিদেশ ডেস্ক

  ২১ অক্টোবর, ২০১৬

মসুল অভিযানের সময়সীমা বাড়তে পারে

ইরাকের মসুলে আইএস-এর বিরুদ্ধে সরকারি বাহিনীর অভিযান কয়েক মাস পর্যন্ত গড়াতে পারে। কারণ এখানে জয়লাভের বিষয়টি নির্ভর করছে জঙ্গিদের মনোবলের ওপর। কুর্দিস্তান কর্তৃপক্ষ এ ইস্যুতে বাগদাদ ও আন্তর্জাতিক মিত্রদের কাছে একটি বিষয় পরিষ্কার করেছে। আর তা হচ্ছে আইএস পরবর্তী মসুলের জন্য একটি ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন ইরাকি কুর্দিস্তানের আঞ্চলিক সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফালাহ মুস্তাফা বাকির। বুধবার আল জাজিরা অনলাইনে তার এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।

এরইমধ্যে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ নিনাওয়া’র ৪০ শতাংশ ভূখÐের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইরাকের সরকারি বাহিনী। আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইএসের পতনের পর নিনাওয়া’র সরকার গঠনের পরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ফালাহ মুস্তাফা বাকির। কারণ অন্য প্রদেশগুলোর সঙ্গে এর তফাৎ রয়েছে। এখানকার জনগণের মধ্যে জাতিগত ও বিশ্বাসগত পার্থক্য রয়েছে।

ফালাহ মুস্তাফা বাকির বলেন, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ অভিযান। এটি সফলভাবেই শুরু হয়েছে। প্রথম দিনটি বেশ ভালোভাবেই গেছে। সম্মিলিত পরিকল্পনা অনুযায়ী সামরিক অভিযান ভালোভাবেই এগুচ্ছে। এখন আইএসের মনোবল ও কৌশলের ওপরই নির্ভর করবে অভিযান কতদিন স্থায়ী হবে। আমরা এই লড়াই চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। ১৭ অক্টোবর ২০১৬ সোমবার ভোরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে আনুষ্ঠানিকভাবে মসুলকে আইএস মুক্ত করতে অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। ওইদিনই আইএস জঙ্গিদের দখল থেকে ইরাকের মসুল শহর পুনরুদ্ধারের লড়াই শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে ইরাকের সেনাবাহিনী ও দেশটির কুর্দিপন্থী গেরিলারা এই লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছে।

লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ইরাকের সরকারি বাহিনী। ইরাকি কুর্দিস্তানের আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট মাসুদ বার্জানি বলেছেন, ইতোমধ্যে আইএসের হাত থেকে অনেক এলাকা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এটি মসুল অভিযানের প্রথম ধাপ। এখানে প্রথমবারের মত সন্ত্রাসী সংগঠন, দায়েশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইরাকি সেনাবাহিনী এবং পেশমের্গা যোদ্ধাদের রক্ত মিশ্রিত হচ্ছে। আমি আশা করি উভয় পক্ষের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের এটি একটি ভালো সূচনা। এদিকে মসুলে ইরাকি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকেই আইএস নেতারা সপরিবারে শহর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এমনটাই দাবি করেছে ইরাকে মোতায়েন মার্কিন বাহিনী।

এক ভিডিও কনফারেন্সের আইএস নেতাদের মসুল ছেড়ে পলায়নের বিষয়ে কথা বলেছেন মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের স্থলবাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল গ্যারি ভোলেস্কি। তিনি বলেন, আমরা দায়েশ (আইএস) জঙ্গিদের এই বার্তা দিতে চাই যে, তাদেরকে বিপদের মুখে রেখে তাদের নেতারা জীবন বাঁচাতে নগরী ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। আমরা দায়েশ নেতাদের মসুল ছেড়ে পালাতে দেখছি।

মসুলের বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরুর তিনদিনের মাথায় এ খবর দিলেন মার্কিন জেনারেল। তিনি বলেন, দায়েশের স্থানীয় সদস্যরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে পালিয়ে যেতে পারলেও মসুলে আটকে পড়া বিদেশি জঙ্গিরা কোনও অবস্থাতেই পালাতে পারবে না।

এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, চেহারা, গায়ের রঙ এবং ভাষাগত কারণে বিদেশি জঙ্গিরা মসুলের সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পারবে না। ফলে তাদেরকে ধরা পড়তেই হবে।

ইরাক ও সিরিয়ায় তৎপর বিদেশি মদদপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি সন্ত্রাসী যোগ দিয়েছে। মসুল নগরীতেও এরকম শত শত বিদেশি জঙ্গি থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই নগরী আইএসের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য গত কয়েক মাস ধরে প্রস্তুতি চলছিল। ২০১৪ সালের জুন মাসে জঙ্গিদের হাতে নগরীটির পতন হয়। মসুল পুনরুদ্ধারের অভিযানে অন্তত ২৫ হাজার সেনা অংশ নিচ্ছেন।

ইরাকে মসুল হচ্ছে আইএসের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি। এই নগরী দখলের পরই আইএস-এর প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি ‘খেলাফত’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিল। কর্মকর্তারা বলছেন, যদি মসুল থেকে আইএসকে পরাজিত করা সম্ভব হয় তাহলে তা হবে আইএসের জন্য একটি বড় ধাক্কা। সূত্র: আল জাজিরা

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist