মুহাম্মদ কামাল হোসেন
নামেই যার ভিন্নতা
পুরনো জরাজীর্ণকে পেছনে ফেলে নতুনরা নবোদ্যমে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, যায়। সব সময় একি নিয়মের বেড়াজালে বা একি বিষয়বস্তুতে কেউ আটকে পড়ে থাকতে পছন্দ করে না। প্রতিটি মানুষ নিজ ইচ্ছে-অনিচ্ছেয় স্বাধীন ও স্বতন্ত্র। বিচারবোধ-বিবেচনা ও মনস্তাত্ত্বিক দর্শনেও আসে পালের হাওয়া ও ভিন্নতা। তাই সংগত কারণে সময়ে-অসময়ে ব্যক্তিগত অভ্যাসের রোজনামচায় ভিন্নতা আসাটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেটা প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেরই একটা অংশ। সেটা নিত্যকার খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে পাঠাভ্যাসই হোক না কেন। টানা ইলিশেও যেমন অরুচি আসে, তেমনি গোশত, পোলা-কোর্মা কিংবা শাকভর্তা, ডালেও নির্ঘাৎ অরুচি চলে আসে। বলতে দ্বিধা নেই, লেখালেখির কারণে দুই যুগ ধরে অনেক দৈনিকের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে দুবছর ধরে যে দৈনিকটির সঙ্গে আমার সবচেয়ে বেশি ওতপ্রোতভাবে ভাব-ভালোবাসা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়েছে, সেটা নিঃসন্দেহে ‘প্রতিদিনের সংবাদ’। অনেক যৌক্তিক কারণে ‘প্রতিদিনের সংবাদ’-এর সঙ্গে আমার হৃদ্যতাপূর্ণ সখ্য গড়ে উঠেছে।
বিভিন্ন সময়ে বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন প্রকারের লেখা দিয়ে পত্রিকাটির চলার পথে নিজেকেও সারথি হিসেবে যুক্ত করেছি। আমি অত্যন্ত সাহসী ও দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে নিজেকে এই পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে ঘোষণা দিতে বরাবর স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পত্রিকাটির ‘এ টু জেড’ সবকিছুই আমার ভালো লাগে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরো কয়েকধাপ এগিয়ে মুগ্ধতাকেও ছাপিয়ে যায়। বিশেষত পত্রিকাটির সংবাদ পরিবেশনের ধরন, বস্তুনিষ্ঠতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। অসত্য, মিথ্যা ও কল্পকাহিনিমিশ্রিত বানোয়াট সংবাদ পরিহার করা হয়েছে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। অন্য পত্রিকাগুলো যেখানে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ভরে রেখেছে অসত্য, অর্বাচীন ও মানহীন স্থূলকায় সংবাদ পরিবেশন করে, সেখানে প্রতিদিনের সংবাদ ঈর্ষণীয় ও সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। বেশি খবর বেশি পৃষ্ঠা নয়, বরং বস্তুনিষ্ঠ পরিমিত খবর, পরিমিত পৃষ্ঠা নিয়ে পত্রিকাটি এগিয়ে যাচ্ছে। সমকালীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক নানা ঘটনাপ্রবাহ, বাঁক, সমস্যা জর্জরিত বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন খবর প্রতিদিনের সংবাদে অত্যন্ত সচেতনভাবে স্বাধীন বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার আতশ কাচের ভেতর দিয়ে উঠে এসেছে। পাশাপাশি শিল্পসাহিত্য, সংস্কৃতি, কলা ও ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন তথ্যবহুলসমৃদ্ধ খবরও সমানতালে উঠে এসেছে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা। শুধু তাই নয়, সমাজের নানাপ্রান্তে ঘটে যাওয়া নানাবিধ সমস্যাকবলিত খেটে খাওয়া প্রান্তিক মানুষগুলোর খবর ও তাদের বিভিন্ন দুর্যোগপূর্ণ সমস্যাও উঠে এসেছে সৎ ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে।
একদল সৎ, দক্ষ ও চৌকস সংবাদকর্মী দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন পত্রিকাটির উত্তরোত্তর মানোন্নয়নে ও সার্কুলেশন বৃদ্ধিতে। তাই সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ও কর্মোদ্দীপনার ফলে প্রতিদিনের সংবাদ আজ একটি অন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। আশা করা যায়, আগামী বছরগুলোয়ও আরো দ্রততার সঙ্গে পত্রিকাটি বিশ্বায়নের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এগিয়ে যাবে। খুব সকালবেলায় ঘুম থেকে ওঠে অন্যান্য কয়েকটি পত্রিকার মতো প্রতিদিনের সংবাদের মূল কাগজের পাশাপাশি অনলাইনে একবার চোখ বুলাতে না পারলে, দিনটাই যেন ঠিকঠাকমতো শুরু করা হয় না। তাই সংগত কারণে, আমার দৈনন্দিন পাঠাভ্যাসের মেন্যুতে প্রতিদিনের সংবাদ থাকে সবার ওপরে।
"