আমিন আশরাফ
সমাজ-সংসারের স্বচ্ছ আয়না
চারপাশটায় আস্তে করে চোখ ফেরালেও আপনি অসংখ্য সংবাদপত্র দেখতে পাবেন। সেটা মফস্বলে হলে বিভিন্ন বুকস্টলে নাম না-জানা পেপার-পত্রিকা ক্লিপে ঝুলতে দেখতে পাবেন। রাজধানীতে হলে এর সংখ্যাও মুখস্থ করার মতো সাধ্য আপনার হবে না। তো বাজারে অনেক সংবাদপত্রই রয়েছে। কেউ কেউ কেবলই সংবাদপত্রের সম্পাদক নাম রাখতেই সংবাদপত্র চালায়। কেউ কেউ কেবলই অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে পত্রিকা প্রিন্ট করে যায়। সংবাদপত্র সত্য ও নিরপেক্ষ বার্তা নিয়ে সবার দুয়ারে পৌঁছে যাক এ নিয়ে তার বা তাদের বিন্দুমাত্র কৌতূহল নেই। নেই এক বিষয়ে এককণা আগ্রহও। অথচ বাঙালি জাতি ও সমাজ সংবাদপত্রের কাছে এক আকাশের চেয়ে বেশি প্রত্যাশা নিয়ে বসে থাকে প্রতিনিয়ত। সত্যের পতাকাবাহী সংবাদপত্রের কাছে জাতি প্রত্যাশা করেÑ সংবাদপত্র ও সংবাদকর্মীরা নির্মল ভোরের মতো মানুষের কাছে সত্যটা তুলে ধরবে।
সংবাদপত্রের দায়িত্ববোধ নিয়ে যত কিছুই বলা হোক, লেখা হোক বা আলোচনার গোলটেবিলে বসা হোক, ঘুরেফিরে এর সারাংশ বলতে হচ্ছে, সংবাদপত্র সমাজের একটা স্বচ্ছ আয়না। সমাজের নিরপেক্ষ দর্পণ। এ দর্পণের কাছে সব স্তরের মানুষ সততা আশা করে। আশা করে অনেক অনেক কিছু। কারণ কোনো জাতির স্বচ্ছ সংবাদপত্র না থাকলে এ জাতিকে স্রেফ কানাজাতিই বলা যেতে পারে।
সমাজের উন্নয়নে সংবাপত্রের দায়িত্ব আকাশসম। সমাজের কোনো একটা গলি নেই যে, যেখানে সংবাদপত্রের কোনো ভূমিকা পালন করতে হয় না। আমার মতো ক্ষুদ্র পাঠককে ‘সংবাদপত্র কেমন হওয়া উচিত’ মূল্যায়ন করাটা সংবাদপত্রের জন্য তেমন একটা সুখকর নয়। এত এত সংবাদপত্রের ভিড়ে ‘প্রতিদিনের সংবাদ’-এর ছয়-ছয়টা বছর পার করাটা চাট্টিখানি কথা নয়। এ বড় ত্যাগকাহন। বিচিত্র অভিজ্ঞতা হাসিলের অসংখ্য ডালপালা। সত্যের পথে অটল থেকে, নিরপেক্ষতা বজায় রেখে, কারো রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সত্য বর্ণমালাগুলো লিখে যাওয়া বড় কঠিন ও দুরূহ কাজ। সেই কঠিনসম, পাহাড়সম কাজগুলো করে যাচ্ছে প্রতিদিনের সংবাদ পরিবার। রবীন্দ্রনাথের ‘সত্য বড় কঠিন, সে কঠিনেরে ভালোবাসিলাম’ প্রত্যয় নিয়ে ‘প্রতিদিনের সংবাদ’ এগিয়ে থাকাদের দলে এগিয়ে থাকুক। বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, পাল্লা দিয়ে চলার বাজারেও নিজেদের আলাদা প্রমাণ করার ভয়ংকরতম সুন্দর কাজটা করে যাক প্রতিদিনের সংবাদ।
"