আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

চাকমা হাজংদের নাগরিকত্ব দেওয়ায় ক্ষোভ

৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে ভারতে আশ্রয় নেওয়া চাকমা ও হাজং শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেও তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বছর দুয়েক আগেই এই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিল। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকার সেই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার ঘোষণা দেয়। ওই শরণার্থীদের তৎকালীন নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স বা নেফা, বর্তমানের অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যে থাকার ব্যবস্থা করেছিল ভারত সরকার।

নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একদিকে যেমন অরুণাচল প্রদেশে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ-ধর্মঘট, তেমনই কেন্দ্রীয় সরকারও সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানাতে চলেছে তাদের আগের নির্দেশ বদল করার জন্য।

স্বরাষ্ট্র দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজিজু অরুণাচল প্রদেশ থেকেই নির্বাচিত। তিনি একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, সুপ্রিম কোর্টের কাছে নির্দেশ পরিবর্তনের জন্য আবেদন করার কথা ভাবা হচ্ছে। কারণ চাকমা ও হাজংদের নাগরিকত্ব দেওয়া হলে সেখানকার স্থানীয় জনজাতি সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। তাদের স্বার্থ রক্ষা করতেই নতুন নির্দেশ চাওয়া হবে। এ নিয়ে যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে অরুণাচল প্রদেশে, সেটাও উল্লেখ করেছেন মন্ত্রী।

সেই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে ছাত্ররা। অল অরুণাচল প্রদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন বা আপসু মঙ্গলবার সারা দিন ধর্মঘট পালন করেছে, একরকম অচল হয়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্য।

আপসুর সাধারণ সম্পাদক তোবোম দাইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিলাম চাকমা-হাজংদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কেন বিরোধিতা করছেন তারা?

‘আইনের মাধ্যমে অরুণাচলের জনজাতিগুলোর স্বার্থ সংরক্ষিত। এমনকি আমাদের ভারতীয়সহ নাগরিকদেরও এখানে জমি মালিকানার অধিকার নেই, রাজ্যে আসতে গেলে ইনার লাইন পারমিট নামের বিশেষ অনুমতি নিতে হয়। সেখানে যদি এই প্রায় এক লাখ শরণার্থীকে নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তো আমরাই সংখ্যালঘু হয়ে পড়ব! এটা কী ভাবে মেনে নেওয়া সম্ভব?’ প্রশ্ন দাইয়ের।

তিনি আরো ব্যাখ্যা করছিলেন, অরুণাচল প্রদেশের মোট জনসংখ্যাই মাত্র নয় লাখের মতো। সব থেকে বড় জনজাতির মানুষ আছেন লাখ দুয়েক। আর যেসব এলাকায় চাকমা-হাজংদের রাখা হয়েছে, সেখানে এমন জনজাতিও আছে, যাদের সংখ্যা মাত্র ২৫-৩০ হাজার। লক্ষাধিক চাকমা-হাজং ভারতের নাগরিক হয়ে গেলে জনজাতিগুলো তো নিশ্চিতভাবেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে!

তবে চাকমা হাজং শরণার্থীদের কথায়, যাদের নাগরিকত্ব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট, তাদের সংখ্যাটা হাজার আটেকের বেশি নয়। এই লক্ষাধিক চাকমার কথা বলে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, যাতে জনজাতিগুলোকে ভুল বুঝিয়ে তাদের সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার আশঙ্কা মনে গেথে দেওয়া যায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist