আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ডোকলামের দখল পেতে চীনের ‘থ্রি ওয়ারফেয়ার স্ট্র্যাটেজি’
রণক্ষেত্রে মুখোমুখি যুদ্ধ করে নয়া দিল্লির কাছ থেকে ডোকলাম ছিনিয়ে নেওয়া যে সহজ হবে না, সে কথা বুঝেছে বেইজিং। আর তাই কি ভারতের বিরুদ্ধে সনাতন ‘থ্রি ওয়ারফেয়ার স্ট্র্যাটেজি’কে হাতিয়ার করল লালফৌজ? একাধিক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ এই কথাই বলেছেন। তারা জানান, ডোকলামে জয় পেতে চীন কিন্তু সুকৌশলে তাদের আসল তাস খেলে ফেলেছে। কিন্তু কী এই কৌশল? বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই কৌশলের ছক তৈরি হয় ২০০৩ এ। যদিও প্রকাশ্যে সে কথা বেইজিং কখনোই স্বীকার করে না। লালফৌজের নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী চীনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন এই স্ট্র্যাটেজিকে ছাড়পত্র দেয়। দক্ষিণ চীন সাগরে দাদাগিরির লক্ষ্যেই জন্ম ‘থ্রি ওয়ারফেয়ার স্ট্র্যাটেজি’র বা তিন রণকৌশল নীতির। এর মধ্যে প্রথমটি হলো ‘মিডিয়া যুদ্ধ’। প্রতিপক্ষকে নিশানা করে চীনা সংবাদমাধ্যমে একের পর এক প্ররোচনামূলক খবর প্রকাশ করে বিপক্ষকে চাপে রাখার ছক করা হয়েছে। ভারত যেটা টের পাচ্ছে। চীনা সংবাদমাধ্যমগুলো প্রায়ই ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুঙ্কার ছাড়ছে।
অবশ্য নয়া দিল্লি ওইসব সংবাদপত্রকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। কারণ, চীনা সংবাদমাধ্যম আসলে সে দেশের শাসক কমিউনিস্ট পার্টির নিয়ন্ত্রণাধীন। দ্বিতীয় কৌশলটি হলো ‘মানসিক যুদ্ধ’। এই কৌশলের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় চীনা সেনা কর্মকর্তাদের। তারা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মৌখিক তোপ দেগে আস্ফালন দেখান। বারবার দেশের সামরিক শক্তির বড়াই করেন। সেনাবহরের খতিয়ান দেন। এই কৌশলেও দমেনি ভারত। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলিরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দেশ এখন আর ১৯৬২র ভারত নেই যে চীনের কাছে হেরে যাবে! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ঢেলে সাজানো হয়েছে দেশের সামরিক বাহিনীকে। আমেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইসরায়েলের কাছ থেকে নিয়মিত অস্ত্র, যুদ্ধবিমান আসছে এ দেশে। চলে এসেছে অত্যাধুনিক কামান, তৈরি রয়েছে দেশের পারমাণবিক সাবমেরিন। আকাশপথে নজর রাখছে অত্যাধুনিক ড্রোন। আর এই সমস্ত সামরিক অস্ত্র পরিচালনা ও দক্ষতায় জল-স্থল ও আকাশে বিপক্ষ যেকোনো দেশের বাহিনীকেই যে টেক্কা দিতে পারে ভারত, সে কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
লালফৌজের ‘থ্রি ওয়ারফেয়ার স্ট্র্যাটেজি’র তৃতীয় কৌশলটি হলো আইনি লড়াই। ২০১৬ সালে এই ছকেই আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ চীন সাগরের দখল পেতে চেয়েছিল বেইজিং। কিন্তু তা মুখথুবড়ে পড়ে। বরং ফিলিপাইনের মতো দেশ কৌশলগত জয় ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এবার ভুটানকে ব্যবহার করে ওই একই পন্থা ভারতের বিরুদ্ধে গ্রহণ করতে চাইছিল চীন। কিন্তু এবারও ওই ছক বানচাল করে দিল ভারত।
"