আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৬ জুলাই, ২০১৭

পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে দ্বিধাবিভক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক নেতৃস্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্য হতাশা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশ কিছু নীতি নিয়ে দ্বিধাবিভক্তি ও আমলাতান্ত্রিক পরাজয়ের পর তাদের অনেকেই কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার অভাবকে দায়ী করছেন বলে কমকর্তারা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের গতানুগতিক নেতৃত্ব এবং ‘আমেরিকাই প্রথম’নীতি নিয়ে নতুন প্রশাসনের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে, এ কারণে পররাষ্ট্রনীতি এবং সরকারে কর্মরত পেশাদার গোয়েন্দাদের সমস্যা হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন তার বন্ধুদের বলেছেন, এক বছর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যেতে পারলে তিনি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করবেন; অন্যদিকে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার গুরুত্বপূর্ণ নীতি নিয়ে হোয়াইট হাউসের ভেতরকার অসংগঠিত ও বিশৃঙ্খল অবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। পরিস্থিতি-ঘনিষ্ঠ এক সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, ‘টিলারসন নিজ বিভাগের ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব, স্বাধীনতা ও স্বশাসনের অধিকার না পেয়ে এবং যেভাবে গতানুগতিক উপায়ে কাজ হচ্ছে তাতে খুবই অসন্তুষ্ট।’ তবে এখনই পদত্যাগের চিন্তা করছেন না পররাষ্ট্র মন্ত্রী; যদিও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্র অবনতিই ঘটছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছে সূত্রটি। তবে টিলারসনের মুখপাত্র আর সি হ্যামন্ড টিলারসনের ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার চিন্তা এবং হতাশা বৃদ্ধির’ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। ‘দায়িত্বে থাকার মতো অসংখ্য কারণ আছে তার আর এর সবগুলোই আমেরিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের জন্য আমেরিকার নেতৃত্বের খুবই প্রয়োজন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এখন সেদিকে মনোনিবেশ করছেন,’ বলেছেন হ্যামন্ড। নীতি বিষয়ে গত সপ্তাহে টিলারসনের বড় ধরনের জয় হয়েছে বলে মনে করছে রয়টার্স; যখন অনিচ্ছা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন স্বীকার করে যে- ইরান ২০১৫ সালে হওয়া ছয়জাতি চুক্তি মেনে চলছে, যে চুক্তিতে পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি ছিল। তবে এ নিয়ে ট্রাম্প, তার প্রধান কৌশলবিদ স্টিভ বেনন এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সেবাস্টিয়ান গোরকার অপ্রকাশ্য সমালোচনায় টিলারসন বেশ হতাশ হয়েছেন বলে অন্য এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। উপসাগরীয় অঞ্চলের চলমান সংকট নিয়েও টিলারসনের সঙ্গে ট্রাম্পের দূরত্ব বেড়েছে। সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও সহযোগিতার অভিযোগ তুলে গত মাসে সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর তাদের প্রতিবেশী কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর টিলারসন সব পক্ষকে সংকট সমাধানে নমনীয় হওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি অবরোধ প্রত্যাহারেরও অনুরোধ জানান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্যের দেড় ঘণ্টার মধ্যে ট্রাম্প সন্ত্রাসবাদে সহযোগিতার জন্য কাতারকে অভিযুক্ত করেন এবং অবরোধ বিষয়ে আরব নেতাদের সহযোগিতার ইঙ্গিত দেন। ‘সরকারের দিক থেকে আমরা বেশকিছু বিভ্রান্তিকর সংকেত দিয়েছি, যদিও পরে আমরা সেসব বিভ্রান্তি দূর করে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি,’ বলেন হ্যামন্ড। জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে শক্ত অবস্থান নিতে রাশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক ফিওনা হিলের মাধ্যমে যে সুপারিশ করেছিলেন তা প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় নাখোশ হয়েছেন নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার। আফগানিস্তানে আরো মার্কিন সেনা পাঠিয়ে তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ত্বরান্বিত করার বিষয়েও প্রশাসনের দ্বিধাবিভক্তি এক সময়ের এই তিন তারকা জেনারলকে মনোক্ষুণœ করেছে বলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist