আল-জাজিরা
টেলিভিশন ভাষণে আমির
কাতারের সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রেখেই সংকটের সমাধান
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বলেছেন, সৌদি আরবের নেতৃত্বে কয়েকটি দেশের সঙ্গে চলমান সংকট নিরসনে সংলাপে আগ্রহী তার দেশ। তবে যেকোনো সমাধান প্রস্তাবে অবশ্যই কাতারের সার্বভৌমত্বকে প্রাধান্য দিতে হবে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে কাতারের আমির এই মন্তব্য করেন।
গত ৫ জুন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিকসহ সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করে সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও মিসর। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় কয়েকটি আরব ও অনারব দেশ। এই সংকট শুরুর দেড় মাসেরও বেশি সময় পর সংকটের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিলেন কাতারের আমির।শুক্রবারের ভাষণে তামিম বলেন, ‘যতক্ষণ কাতারের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখানো হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ঝুলে থাকা এই সংকট সমাধানে সংলাপে আগ্রহী।’
কাতারের আমির বলেন, তার দেশ নজিরবিহীন প্রচারণার শিকার হয়েছে। কিন্তু সেই সময়ে সংকটের মধ্যস্থতা করতে কুয়েত যে ভূমিকা রেখেছে, তার মূল্য অপরিসীম। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক ও জার্মানির প্রচেষ্টাকেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
সংকট শুরুর পর দ্রুত প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো ও সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় তুরস্ককে বিশেষ ধন্যবাদ দেন কাতারের আমির। তিনি বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে, আমাদের বিরুদ্ধে প্রচারণা পূর্বপরিকল্পিত। আমরা পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছিলাম এবং সেটাতে পাস করেছি।’
কাতারের ওপর থেকে স্থল অবরোধ সরাতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান : মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের ওপর থেকে স্থল অবরোধ সরিয়ে নিতে সৌদি আরবের নেতৃত্বধীন আরব দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউসুফ বিন আলাওয়ী বিন আবদুল্লাহর সঙ্গে এক বৈঠক শেষে এ আহ্বান জানান টিলারসন। বৈঠক শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের বিরুদ্ধে লড়তে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে কাতার। সেই চুক্তি বাস্তবায়নে দেশটি বেশ আগ্রহী।
টিলারসন বলেন, ‘তারা চুক্তি বাস্তবায়নে বেশ আগ্রহী। তাদের এই কর্মকা-ে আমরা সন্তুষ্ট। আমি মনে করি, আর আরব দেশ এটিকে একটি ভালো নিদর্শন হিসেবে দেখে কাতারের ওপর থেকে স্থল অবরোধ তুলে নেবে, যেটি কাতারের মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’
সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের অভিযোগে গত ৫ জুন সৌদি আরবের নেতৃত্বে উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার (জিসিসি) সদস্য রাষ্ট্র বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তাদের আরব মিত্র মিসর কূটনৈতিকসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে কাতারের সঙ্গে। সেই সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে দেশগুলো সম্প্রতি কাতারকে ১৩টি দাবি দেয়।
কাতারকে দেওয়া ওই শর্তগুলোর মধ্যে দোহাভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরা বন্ধ ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক কমানোর বিষয়টিও ছিল। তবে কাতারের পক্ষ থেকে এই দাবিগুলো ‘অবাস্তব ও বাস্তবায়নযোগ্য নয়’ বলে দাবি করা হয়।
"