পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে উত্তর কোরিয়া বলেছে, ধৈর্যের একটা সীমা আছে। ওয়াশিংটনের আস্থা অর্জনে পিয়ংইয়ং এতদিন যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল, চাইলে তার উল্টো পদক্ষেপ নিতে পারে বলেও সতর্ক করেছে তারা। গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এসব কথা বলেন।

ফেব্রুয়ারিতে হ্যানয়ে ট্রাম্প-কিম বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে সব ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগের কথা বললে পিয়ংইয়ং মার্কিন নেতৃত্বাধীন সব আন্তর্জাতিক অবরোধ তুলে নেওয়ার দাবি করে। দুই পক্ষ পারস্পরিক সম্মতিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় ভেস্তে যায় আলোচনা। হ্যানয়ের বৈঠক ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর গত ৩০ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে ওয়ার্কিং লেভেলে আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়ে সম্মত হন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি সুইডেনে আলোচনায় বসে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। তবে এর কিছুক্ষণ পর উত্তর কোরীয় কর্মকর্তারা জানান, আর আলোচনা হবে না। দেশটির পরমাণুবিষয়ক সর্বোচ্চ দূত কিম মিয়ং গিল বলেন, ‘সংলাপে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি এবং শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পুরোনো ধ্যানধারণার কোনো পরিবর্তন হয়নি। দেশটিকে অবশ্যই এমন দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। তারা তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ না করায় আমাদের হতাশ করেছে।’ এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মরগান ওর্টেগাস বলেন, ‘ডিপিআরকে (উত্তর কোরিয়া) প্রতিনিধিদের মন্তব্য সাড়ে আট ঘণ্টার আলোচনার বিষয়বস্তু কিংবা উদ্যমের প্রতিফলন ঘটায়নি। এবারের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র সৃজনশীল কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এসেছিল এবং এগুলো নিয়ে ডিপিআরকে’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভালো আলোচনা হয়েছে।’

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ ইউরোপীয় সদস্য দেশ বৈঠক করেছে। এতে উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বাতিলের আহ্বান জানায় তারা। এ সময় নিরাপত্তা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষারও নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা কেসিএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ধৈর্যের সীমা আছে এবং আমাদের এ সংযত ভাব অনির্দিষ্টকালের জন্য চালাতে হবে এমন কোনো আইন নেই।’

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার আত্মরক্ষার ইস্যুকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের ‘অন্যায্য’ বলার নিন্দা জানিয়েছে পিয়ংইয়ং। বাস্তবতা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আস্থা অর্জনের জন্য আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, তার পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

"