আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১১ অক্টোবর, ২০১৯

সিরিয়ায় তুর্কি অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র ‘সবুজ সংকেত’ দেয়নি : পম্পেও

সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব সীমান্তে কুর্দি ওয়াইপিজি গেরিলাদের বিরুদ্ধে তুরস্কের অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র ‘সবুজ সংকেত’ দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। গত বুধবার সম্প্রচারমাধ্যম পিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সিরীয় সীমান্ত নিয়ে আঙ্কারার নিরাপত্তা উদ্বেগকে ‘ন্যায্য’ আখ্যা দিয়েছেন বলেও জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

পম্পেও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কুর্দি অধ্যুষিত এলাকার মার্কিন সেনাদের বিপদের বাইরে রাখতেই তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

ওয়াশিংটনের এ সিদ্ধান্তের পরপরই তুরস্ক সিরিয়ার কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সর্বাত্মক অভিযান চালানোর ঘোষণা দেয়। গত বুধবার বিমান হামলা চালানোর পাশাপাশি তাদের সেনাবাহিনী ও তুর্কি সমর্থিত সিরীয় বিদ্রোহীরা তেল আবায়াদ ও রাস আল-আইনের চারটি পয়েন্ট দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে।

‘অপারেশন পিস স্প্রিং’ অভিযানের প্রথম দিনে তুরস্কের বিমান ও কামান কুর্দিদের ১৮১টি স্থাপনায় আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে আঙ্কারা। এসব হামলায় অন্তত পাঁচ বেসামরিকসহ আটজন নিহত ও কয়েক ডজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স (এসডিএফ)। কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফ মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটবিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ছিল।

ট্রাম্প মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নিয়ে মিত্রদের ‘পেছন থেকে ছুরি মারায়’ তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন প্রভাবশালী রিপাবলিকান নেতারাও।

কুর্দিদের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়া ট্রাম্পের মেয়াদের সবচেয়ে বড় ভুল, বলেছেন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। আরেক রিপাবলিকান নেতা লি চেনি বলেছেন, এমন সিদ্ধান্ত রাশিয়া, ইরান ও তুরস্ককে সিরিয়ায় আরো শক্তিশালী করবে। তুর্কি অভিযান জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পুনরুত্থানে ভূমিকা রাখতে পারে বলেও আশঙ্কা তার।

যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মিত্র কুর্দিদের ঠেগে এসেছে, যারা আইএসের বিরুদ্ধে মুখোমুখি লড়াই করেছে ও আমাদের স্বদেশকে সুরক্ষিত রাখতে সহযোগিতা করেছে। (ট্রাম্পের) এ সিদ্ধান্ত আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া, ইরান ও তুরস্ককে সুবিধা করে দেবে এবং আইএসের পুনরুত্থানের পথ করে দেবে, বলেছেন তিনি। পম্পেও অবশ্য পিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের পুনরুত্থানের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন।

তুরস্কের এ অভিযানে পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগ জানিয়েছে। পাঁচ ইউরোপীয় দেশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম ও পোল্যান্ডের অনুরোধে গতকাল বৃহস্পতিবার এ অভিযান নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনাও হবে। গত শনিবার কায়রোতে জরুরি বৈঠক ডেকেছে আরব লিগও।

আইএসবিরোধী লড়াইয়ে সফলতার পর এসডিএফের নিয়ন্ত্রণেই সিরিয়ার বিশাল অংশ রয়েছে। বলা হচ্ছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পর তাদের নিয়ন্ত্রণেই সিরিয়ার সবচেয়ে বড় অংশ। গত বুধবার তুর্কি অভিযান শুরুর পর মস্কো কুর্দিদের দামেস্কের সঙ্গে বসার আহ্বান জানিয়েছে।

এদিন ট্রাম্প সিরিয়ায় তুর্কি অভিযানকে ‘বাজে পরিকল্পনা’ আখ্যা দিলেও ওই এলাকা থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close