বিশ্বে প্রতিদিন ১০ লাখ মানুষ নতুন করে যৌনবাহিত সংক্রমণে আক্রান্ত হন। আর বছরে ক্ল্যামাইডিয়া, গনোরিয়া, ট্রিকোমোনিয়াসিস ও সিফিলিস এ চারটি সংক্রমণে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ কোটি ৬০ লাখ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিশ্বজুড়ে চারটি যৌনবাহিত সংক্রমণের মাত্রা নিয়ে নিয়মিত পর্যালোচনা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত কর্মীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা। নতুন প্রতিবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ২০১২ সালে পরিচালিত সর্বশেষ বিশ্লেষণে পাওয়া তথ্যের তুলনায় নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার হার কমেনি। বিশ্বজুড়ে প্রতি ২৫ জনের একজন চারটি সংক্রমণের (ক্ল্যামাইডিয়া, গনোরিয়া, ট্রিকোমোনিয়াসিস ও সিফিলিস) যেকোনো একটিতে আক্রান্ত হচ্ছে। আবার কেউ কেউ একই সময়ে একাধিক যৌনবাহিত সংক্রমণে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ধরনের সংক্রমণের বিস্তারকে ‘সতর্ক বার্তা’ বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা পিটার সালামা বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে যৌনবাহিত রোগগুলোর বিস্তার ঠেকাতে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা তেমন একটা অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। এটি একটি সতর্ক বার্তা। এ ধরনের রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার সুযোগ যেন সব জায়গায় ও সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’

চারটি যৌনবাহিত সংক্রমণের মধ্যে ট্রিকোমোনিয়াসিস হলো এক ধরনের পরজীবী দ্বারা সৃষ্ট। আর ক্ল্যামাইডিয়া, গনোরিয়া, ও সিফিলিস হলো ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত। ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত যৌনবাহিত রোগগুলোর ওষুধ সহজলভ্য হলেও সিফিলিসের ক্ষেত্রে তা কঠিন। কারণ এ রোগের চিকিৎসায় সুনির্দিষ্ট পেনিসিলিন প্রয়োজন হয়, যার ঘাটতি রয়েছে।

যৌনবাহিত রোগগুলোর উপসর্গের মধ্যে রয়েছে, রক্তপাত, প্রস্রাব করার সময় ব্যথা, ঋতুস্রাবের মাঝামাঝি সময়ে রক্তপাত। অবশ্য, অনেক ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গই থাকে না। ক্ল্যামাইডিয়া ও গনোরিয়ার কারণে অনেক সময় নারীরা গর্ভ ধারণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। আর সিফিলিসের কারণে কার্ডিওভাস্কুলার ও স্নায়ু রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে যৌনবাহিত সংক্রমণের কারণে বিপত্তি হতে পারে সবচেয়ে বেশি। এক্ষেত্রে নবজাতকের অকালজন্ম, নিউমোনিয়া, অন্ধত্বসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

"