আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০২ জুন, ২০১৯

ওআইসি সম্মেলনে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আহ্বান

গত শুক্রবার বিকালে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) ১৪তম সম্মেলন শুরু হয়েছে। সম্মেলনের প্রথম দিনেই ভাষণ দিয়েছেন সৌদির দুই পবিত্র মসজিদের প্রধান এবং সৌদির বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ।

ভাষণে মুসলিম দেশগুলোকে সন্ত্রাস এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে একত্রে যুদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাদশাহ সালমান। সম্মেলনে আরব আমিরাতের জলসীমায় সৌদির চারটি জাহাজে নাশকতার ঘটনা এবং সৌদির তেল স্টেশনে ড্রোন হামলার ঘটনার কথা তুলে ধরা হয়।

বাদশাহ সালমান জোর দিয়ে বলেন, সৌদির তেল স্টেশনে হামলার ঘটনা শুধু সৌদি আরব বা আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে নয় বরং তা পুরো বিশ্বের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরাই তেল স্টেশনে হামলার পেছনে দায়ী।

বাদশাহ সালমান আরো বলেন, ড্রোন হামলা সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে হুমকি তৈরি করেছে। তিনি আরো বলেন, দুটি তেলের ট্যাংকারসহ সৌদির চার জাহাজে নাশকতার ঘটনা এই অঞ্চলের সামুদ্রিক নিরাপত্তা এমনকি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও ভয়ানক হুমকিস্বরূপ।

বাদশাহ সালমান বলেন, ওআইসির ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা স্মরণ করতে চাই যে, আল আকসা মসজিদে অগ্নিকা-ের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এই সংস্থার যাত্রা শুরু হয়েছিল। আল আকসা এখনো বেদখল হয়ে আছে। নিয়মিত সেখানে আক্রমণ চালানো হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ফিলিস্তিনের হাত ধরেই ওআইসির ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি হয়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার আদায়ই আমাদের মূল লক্ষ্য। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যৌথভাবে কাজ করার প্রচেষ্টা ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, মুসলিম উম্মাহ এবং পুরো বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বড় যে হুমকি তা হচ্ছে চরমপন্থা এবং সন্ত্রাস। আমাদের একত্র হয়ে সন্ত্রাস এবং এর সমর্থকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। একইসঙ্গে সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে।

ওই সম্মেলনে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ওআইসির মহাসচিব ইউসুফ আল ওথাইমেন। এদিকে বিশ্বের অন্য মুসলিম নেতাদের সঙ্গে ওআইসির ১৪তম সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার দিনের সরকারি সফরে গত শুক্রবার বিকালে সৌদি আরব পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের নিন্দা : জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজনীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ৫৭টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত সংস্থাটির এক বিবৃতির সূত্রে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ যে দেশগুলো জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘোষণা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের মে মাসে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় অস্ট্রেলিয়া ও গুয়েতমালার পক্ষ থেকেও জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করা হয়।

গতকাল শনিবার ওআইসির বিবৃতিতে ‘জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্র ও গুয়াতেমালার দূতাবাস স্থানান্তরের’ নিন্দা জানানো হয় এবং এই নগরীতে দূতাবাস স্থাপনকারী দেশগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ওআইসির সব সদস্য রাষ্ট্রকে আহ্বান জানানো হয়।

বেশ কিছুদিন ধরেই ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ আখ্যা দিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের সংকট নিরসনে একটি প্রস্তাব হাজির করার তোড়জোড় চলছে। তবে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনিরা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন রেখেছে।

আগামী ২৫ ও ২৬ জুন বাহরাইনের রাজধানী মানামায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন একটি সম্মেলনে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত সেই চুক্তির প্রথম অংশ প্রকাশের কথা রয়েছে। এই চুক্তি মানতে ফিলিস্তিনিদের বাধ্য করার প্রচেষ্টার অভিযোগও এসেছে সংবাদমাধ্যমে। সেই ধারাবাহিকতায় মানামা সম্মেলনে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close