আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৮ এপ্রিল, ২০১৯

অভিযুক্ত প্রার্থী বহু : মোদির প্রতিজ্ঞাই সার

পাঁচ বছর আগের কথা। ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল। প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসার আগে নরেন্দ্র মোদি হুশিয়ারি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত সাংসদ-বিধায়কদের বিশেষ আদালতে টেনে নিয়ে যাবেন তিনি। দোষীদের জেলে পাঠাবেন এক বছরের মধ্যে।

পাঁচ বছর পর লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণের সয়ে দেখা গেল, সব দলের প্রার্থী তালিকাতেই অপরাধের রেকর্ড থাকা নেতানেত্রীরা বর্তমান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সেই তথ্য পার্টির ওয়েবসাইটে তুলে ধরতেও রাজনৈতিক দলগুলোর ঘোর অনীহা।

দুদিন আগে বেসরকারি সংগঠন এডিআর (অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস) মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়ে বলে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, অপরাধের রেকর্ড থাকা কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হলে নিজেদের ওয়েবসাইটে তা জানানোর কথা রাজনৈতিক দলগুলোর। মনোনয়ন জমার পর প্রার্থী তথা দলকে তার বিরুদ্ধে অপরাধের মামলার খতিয়ান স্থানীয় সংবাদপত্রে তিনবার বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে হবে। কিন্তু প্রথম দফার ভোটের মনোনয়ন পর্ব শেষে জাতীয় দলগুলোর ২২০ জন প্রার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ৮১ জনের বিরুদ্ধে নানা অপরাধের মামলা রয়েছে। ৪৭ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি মামলা। অথচ বিজেপি হোক কংগ্রেস, বিএসপি হোক বা এনসিপি— কোনো দলের ওয়েবসাইটেই সেই তথ্য দেওয়া হয়নি। একমাত্র তেলঙ্গানা রাজ্য বিজেপির ওয়েবসাইট ছাড়া আর কোথাও সেই তথ্য নেই।

কেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানা হয়নি, সে বিষয়েও মুখ খুলতে নারাজ বিজেপি, কংগ্রেস, বিএসপি, এনসিপির নেতারা। যদিও সিপিএম নেতা নীলোৎপল বসু বলেন, ওয়েবসাইটে তথ্য দিতে হবে না কি না, তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। তবে স্থানীয় সংবাদপত্রে আমরা বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি।

পাঁচ বছর আগে গান্ধীনগরের জনসভায় মোদি বলেছিলেন, আমাকে রাজনৈতিক ব্যবস্থাটা পরিচ্ছন্ন করতে একটা মাত্র সুযোগ দিন। আমি অভিযুক্ত সাংসদ-বিধায়কদের জন্য বিশেষ আদালত তৈরি করব। তা-ও এক বছরের মধ্যে। এক বছর পরে, অপরাধীরা জেলে যাবে। সাংসদ-বিধায়কদের পর পঞ্চায়েত স্তরেও এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদি। কিন্ত গত পাঁচ বছরের খতিয়ান বলছে, রাজনৈতিক ব্যবস্থা পরিচ্ছন্ন করতে সুপ্রিম কোর্টকেই কার্যত উদ্যোগী হয়ে প্রতিটি রাজ্যকে বিশেষ আদালত তৈরির নির্দেশ দিতে হয়েছে। ওই আদালত তৈরির মামলা চলার সময়েই গত ডিসেম্বরে তথ্য এসেছে, দেশে বর্তমান ও প্রাক্তন সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে এখন ৪ হাজার ১২২টি ফৌজদারি মামলা ঝুলছে। তার মধ্যে বর্তমান সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ২ হাজার ৩২৪টি। শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছিলেন, কারো বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা থাকলে তার প্রার্থী হওয়া আটকাবে কি না, তা নিয়ে সংসদই আইন আনতে পারে। কিন্তু মোদি সরকার নতুন কোনো আইন আনার চেষ্টা করেনি। এখন কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হলেই তার নির্বাচনে লড়ার ক্ষেত্রে বাধানিষেধ রয়েছে। এই প্রশ্নে অবশ্য সব রাজনৈতিক দলেরই মত, এ দেশে বিরোধী দলের নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close