আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৩ এপ্রিল, ২০১৯

শান্তিতে ভোট, ইভিএমে অশান্তি

জেলা তৃণমূল সভাপতি মোহন শর্মা কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ তুললেও বিজেপি প্রার্থী জন বার্লা দিনভর খোশ মেজাজে বুথে বুথে ঘোরেন।

পঞ্চায়েত ভোটে হানাহানির স্মৃতি এখনো বিশেষ ফিকে হয়নি। তাই আশঙ্কা ছিল দুই জেলাতেই। কিন্তু বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে গত বৃহস্পতিবার প্রথম পর্বের ভোট মোটামুটি শান্তিপূর্ণ। কোচবিহারের দিনহাটা, শীতলখুচি থেকে ছাপ্পা, রিগিং, বুথ দখলের অভিযোগ উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দিনের শেষে বিজেপির প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক বহু ভোটে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে অবস্থান শুরু করেন। সিতাই, শীতলখুচির তিনটি বুথে ভোটারদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষও। পাশের জেলা আলিপুরদুয়ারে অবশ্য ভোট শান্তিপূর্ণ।

জেলা তৃণমূল সভাপতি মোহন শর্মা কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ তুললেও বিজেপি প্রার্থী জন বার্লা দিনভর খোশ মেজাজে বুথে বুথে ঘোরেন।

এ দিন ইভিএমে সমস্যা নিয়েও প্রচুর অভিযোগ আসে। কোচবিহারে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, অন্তত ৮০টি ইভিএমে গোলমাল দেখা দিয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নালিশ করেন, ‘এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো চক্রান্ত রয়েছে।’ রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন মক পোল চলার সময়ে ৫১টি ভিভিপ্যাটে এবং ভোট চলাকালীন ৬৫টি ভিভিপ্যাটে ত্রুটি ধরা পড়ে। ব্যালটে ত্রুটি ধরা পড়ে ০.০২ শতাংশ ইউনিটে। পরে দিল্লিতে কমিশন দফতর সূত্রে বলা হয়, ভোটপর্ব স্বাভাবিক ছিল। অশান্তি একটি বুথে ইভিএম নিয়ে গোলমাল হয়েছে বলে খবর মিলেছে। তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে সেখানে পুনর্নির্বাচন করা হতে পারে।

কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক রাত পর্যন্ত অবস্থানে বসে থাকলেও এ দিনের ভোটকে শান্তিপূর্ণ বলেছেন সিইও আরিজ আফতাব এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত। একই কথা বলেছেন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবেও। তার মতে, ‘প্রত্যেকে তার নিজের ভোট দিয়েছেন।’

একই দাবি করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ। তিনি বলেন, ‘৯০ শতাংশ বুথে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। কিন্তু যে ৯০টি বুথে সমস্যা হয়েছে, সেখানকার ভোটাররাইবা কেন ভোট দিতে পারবেন না?’

জেলা কোচবিহার নেতৃত্ব কিন্তু বারবারই দাবি করেছে, বহু বুথে রিগিং, বুথ দখল ও ছাপ্পা হয়েছে। বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রথমে ১৬৬টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান। তবে রাতে অবস্থানে বসে তিনি জানান, যে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না, সেগুলোর মোট ৩৫০ আসনে ফের ভোট করতে হবে। সেই অবস্থানের সময়ে তার দেহরক্ষী কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে স্থানীয় পুলিশের হাতাহাতিও হয় বলে অভিযোগ। দিল্লিতে মুখতার আব্বাস নকভি দাবি করেছেন, ‘তৃণমূল বিভিন্ন জায়গায় গুন্ডামি করেছে।’ গতকাল শুক্রবার এই নিয়ে কমিশনের যাওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছিল বিজেপি। রাহুল সিংহ অবশ্য কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘স্পর্শকাতর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই কেন, সেটাই সব থেকে প্রশ্ন।’ একই প্রশ্ন তোলা হয়েছে বামপন্থিদের তরফ থেকেও। এ দিন বাম প্রার্থী গোবিন্দ রায়ের গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তুলনায় আলিপুরদুয়ারে ভোটগ্রহণ ছিল শান্তিপূর্ণ। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মার অভিযোগ, ‘জয়গাঁয়ের একটি বুথে প্রকাশ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ভোটারদের বিজেপিকে ভোট দিতে আবেদন জানান। কুমারগ্রামের একটি বুথে ইভিএমে আমাদের প্রার্থীর বোতামটি অকেজো করে রাখা হয়। আমরা ওই বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close