আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

ট্রেনযোগে ভিয়েতনামে কিম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে অংশ নিতে সাঁজোয়া ট্রেনযোগে ভিয়েতনামে পৌঁছেছেন উত্তর কোরিয়া নেতা কিম জং উন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে তিনি ভিয়েতনামের লাং সং প্রদেশের সীমান্তবর্তী ডং ডাং রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছান। এ সময় তাকে সেখানে লালগালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

পরে সেখান থেকে মার্সিডিজ গাড়িতে চড়ে বসেন তিনি। এ সময় সেখানে ভিয়েতনামের নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। পুরো এলাকা ঢেকে দেওয়া হয় নিরাপত্তার চাদরে।

কিম জং উন ট্রেনযোগে উত্তর কোরিয়া থেকে ভিয়েতনামে পৌঁছাতে সময় লেগেছে আড়াই দিন। এ সময় তিনি ট্রেনযোগে ২ হাজার ৮০০ মাইল এলাকা পাড়ি দেন। এর মধ্য দিয়ে চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হওয়া গেল যে, ট্রাম্প-কিমের মধ্যকার বহুল আলোচিত বৈঠকটি শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

২০১৮ সালের জুনে সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প-কিম ঐতিহাসিক বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে এক সমঝোতা চুক্তি হয়। যৌথভাবে কোরিয়া উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার ব্যাপারে একমত হন তারা। তবে নিরস্ত্রীকরণের রূপরেখা সুনির্দিষ্ট না হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে দর কষাকষি চলছে। সেই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আজ বুধ ও বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামের রাজধানীতে দ্বিতীয়বার বৈঠকে বসছেন তারা।

এ দফার আলোচনায় পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ইঙ্গিত পাওয়া যায় এমন ফল বা অন্ততপক্ষে এ লক্ষ্যে সীমিতমাত্রায় হলেও রোডম্যাপ নির্ধারণের প্রত্যাশার বিষয়ে দুই নেতাই সতর্ক থাকবেন। এজন্য দুই পক্ষই কী ধরনের ঐক্যমত প্রস্তুত করে তার ওপর নজর রাখবেন বিশ্লেষকরা।

ওয়াশিংটনের প্রকৃত অবস্থান হলো উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত কোনো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আগেই এককভাবে পিয়ংইয়ংকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে। তবে কয়েক দিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে জোর করতে তাড়াহুড়া করতে চান না তিনি।

বিবিসির ধারণা, এবারের দফায় ট্রাম্প-কিম বৈঠকে সম্ভবত আনুষ্ঠানিকভাবে কোরীয় যুদ্ধ অবসানের ঘোষণা আসবে। কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, উত্তর কোরিয়াকে বাস্তব অগ্রগতি দেখানোর আহ্বান জানাবে যুক্তরাষ্ট্র। এর অংশ হিসেবে সামান্য কিছু মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিনিময়ে উত্তর কোরিয়াকে ইয়ংবিয়ং পারমাণবিক কেন্দ্র ও মিসাইল ঘাঁটি ভেঙে ফেলার কথা বলা হবে। এরই মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্র পরিত্যাগ করলে উত্তর কোরিয়া একটি বৃহৎ অর্থনৈতিক পরাশক্তিতে পরিণত হতে পারে। রোববার টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এটা উপলব্ধি করতে পারছেন যে, সম্ভবত অন্য যে কোনো কিছুর চেয়ে পারমাণবিক অস্ত্র বাদ দিয়ে তার দেশ দ্রুত একটি অর্থনৈতিক অর্থনৈতিক পরাশক্তিতে পরিণত হতে পারে। কেননা অবস্থানগত এবং জনসংখ্যাগত কারণে অন্য দেশের তুলনায় দ্রুত প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি!

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও মন্তব্য করেন, উত্তর কোরিয়া এখনো একটি পরমাণু হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে। পম্পেওর ওই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে টুইটারে এ পোস্ট দেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প ও কিমের মধ্যকার বহুল আলোচিত এ দ্বিতীয় বৈঠকটি আজ বুধ ও বৃহস্পতিবার হ্যানয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ভিয়েতনাম সরকারও আনুষ্ঠানিকভাবে এ শীর্ষ বৈঠকের জন্য নিজেদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close