আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১০ জানুয়ারি, ২০১৯

ব্রেক্সিটে নতুন বাধা

পার্লামেন্ট ভোটে হারলেন থেরেসা

চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার বাস্তবতায় সরকারের ক্ষমতার সীমা কতটুকু হবে, তা নিয়ে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে হেরে গেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) পার্লামেন্টে এমপিদের একটি বড় অংশ এ সংক্রান্ত অর্থ বিল সংশোধনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। লেবার এমপি ইভেত্তে কুপার প্রস্তাবিত সংশোধনীতে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট পরিস্থিতিতে সরকারের কর সংক্রান্ত প্রশাসনিক ক্ষমতা খর্ব করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট বাস্তবায়িত হলে সরকার কর সংক্রান্ত প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে না, এজন্য পার্লামেন্টের চূড়ান্ত অনুমোদন দরকার হবে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, অর্থ বিল সংশোধনের প্রস্তাব পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসার ক্ষেত্রে আরেক ধাপ বাধার মুখে পড়লেন থেরেসা মে।

২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা। বের হয়ে যাওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যিক ও অন্যান্য আদান-প্রদান সংক্রান্ত সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে জোটটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন থেরেসা। সে ব্রেক্সিট চুক্তি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদন করানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কবে ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত করা নিয়ে বার বারই হোঁচট খেয়ে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ব্রেক্সিট চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্বিমতকে কেন্দ্র করে পদত্যাগ করেছেন দুই দুইজন ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী। অন্য মন্ত্রণালয়েরও কয়েকজন সরে দাঁড়িয়েছেন। পদত্যাগ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনও। তুমুল বিরোধিতার মধ্যে থেরেসার ব্রেক্সিট চুক্তিটি অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। তবে এ ব্রেক্সিট চুক্তি না হলেও চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসতে পারবে যুক্তরাজ্য। একে নো ডিল ব্রেক্সিট পরিস্থিতি নামে ডাকা হচ্ছে। তবে এ প্রশ্নেও রয়েছে বিরোধিতা।

কোনো চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসার বিরোধিতাকারী এমপিরা মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) অর্থ বিল সংশোধনের পক্ষে ভোট দেন। ৩০৩-২৯৬ ভোটে লেবার নেতা কুপার উত্থাপিত প্রস্তাবটি পাস হয়। হাউস অব কমন্সে দেওয়া বক্তব্যে কুপার বলেন, হাউসের এমপিরা চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিপদ থাকার আশঙ্কার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। ‘আমার আশঙ্কা, আমরা ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছি এবং সে পরিস্থিতি মোকাবিলার ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতে থাকবে না। আমি মনে করি, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে না দেখে আমাদের কিছু করা উচিত।’ বলেন কুপার।

এ সংশোধনী অনুযায়ী, চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট করতে গেলে ব্রিটিশ সরকারকে পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হবে। কর আইন সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট ক্ষমতা ব্যবহার করার আগেই সরকারকে এ অনুমোদন নিতে হবে। এর নেপথ্য ভূমিকা পালনকারী আইনপ্রণেতাদের আশা, সংশোধিত বিলটি পাস হওয়ায় ব্রেক্সিট ঠেকাতে আইনসভার মাধ্যমে আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ গৃষ্টি হবে।

পক্ষের এমপিরা ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসা ঠেকাতে আরও কিছু সংসদীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের ২০ জন এমপিও সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close