আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

মোদিকে দেয়াল লিখন পড়ার পরামর্শ রাহুলের

ভারতের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেয়াল লিখন পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মোদিকে এমন পরামর্শ দেন তিনি।

দিল্লির আকবর রোডের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল বলেন, ‘কংগ্রেস মুক্ত ভারতের স্বপ্নের কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তা অসম্ভব। মোদির থেকে শিখলাম কোন কাজ করা উচিত নয়।’ রাহুল গান্ধী বলেন, ‘কৃষকদের দুরবস্থা, বেকারত্ব এবং দুর্নীতি–Ñ এ তিনটি বিষয়ের ওপর ভর দিয়েই ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তিনি দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। গত পাঁচ বছরে দেশের সমস্যা দূর করতে পারেননি মোদিজি।’ মধ্য প্রদেশে ক্ষমতায় এলে কৃষিঋণ মওকুফ করারও প্রতিশ্রুতি দেন রাহুল।

ছত্তিশগড়, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশে কংগ্রেসের উত্থানে জাতীয় রাজনীতিতেও বদলে ইঙ্গিত দেখছেন কংগ্রেস সভাপতি। তিনি বলেন, ‘যে আওয়াজ এখন উঠেছে, সেটা আমাদের শুনতে হবে। এখন পরিবর্তনের সময়। সেটাকেই এগিয়ে নিয়ে যাব আমরা। মধ্য প্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থানে অনেক কাজ করার আছে। আমরা তিন রাজ্যেই উন্নয়নের চেষ্টা করব।’

এদিন বেকারত্ব, কর্মসংস্থান করার প্রশ্নে মোদি সরকারকে কটাক্ষ করেন রাহুল। বলেন, ‘মানুষের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী চাকরির যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা রাখতে পারেননি। আপনারা যা করছেন, তাতে দেশের মানুষ খুশি নয়। ভোটের এই ফলাফলে আশা করি সেই বার্তাই পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং তার দল বিজেপি। মোদিজি কখনই মানুষের চাহিদা বুঝতে পারেননি। বেকারত্ব এবং কৃষকদের সমস্যা শুধু মধ্য প্রদেশের ব্যাপার নয়, গোটা দেশের কাছে সমস্যা। মোদির আমলে দেশ ভালো নেই।’

কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘বিরোধীরা একজোট হয়ে লড়াই করবে।’ তবে কৌশলে প্রধানমন্ত্রীত্বের প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি। বলেন, ‘যেসব রাজ্যে আমরা সরকার গড়ব সেখানে কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ছিলেন না। আমরা এখন বলে তা ঠিক করব। কোনও সমস্যা হবে না।’ বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করাই বিরোধীদের লক্ষ্য বলে জানান রাহুল। পাঁচ রাজ্যে ভোট চলাকালীন ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ করে কংগ্রেস। নির্বাচনেও জেতার পরও ইভিএম মেশিনে ভোটের বিপক্ষে সরব হন রাহুল গান্ধী। আমেরিকার উদাহরণ টেনে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘ইভিএমএর মধ্যে এমন একটি চিপ আছে যার মাধ্যমে গোটা নির্বাচনি প্রক্রিয়াকেই প্রভাবিত করা যায়। তাই আমেরিকার মতো দেশও ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে ব্যালট বাক্সে ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করেছে।’

পাঁচ রাজ্যের ভোটে ফালাফল ছিল লোকসভার আগে কংগ্রেস শিবিরের কাছে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। ভালো ফল না হলে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতো। চারদিকে বিজেপির জাল বিস্তার হতো। কিন্তু সাফল্য বদলে দিয়েছে অনেক কিছু। হাত শক্ত হওয়ায় বেড়েছে কংগ্রেস নেতাকর্মীদের মনোবল। আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে ২০১৯-এর ফাইনালে।

বিধানসভা নির্বাচনের ফলে যখন কপালে চিন্তার ভাঁজ অমিত শাহ-নরেন্দ্র মোদি জুটির তখন রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছে কংগ্রেস শিবির।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close