আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮

লুট করা ঘণ্টা ফেরত দিল যুক্তরাষ্ট্র

যুদ্ধ জয়ের স্মারক হিসেবে লুট করা গির্জার কয়েকটি ঘণ্টা ১০০ বছরেরও বেশি সময় পর ফিলিপিন্সকে ফেরত দিল যুক্তরাষ্ট্র।

গতকাল মঙ্গলবার ‘বেলস অব বালাঙ্গিগা’ নামে পরিচিত ঘণ্টাগুলো একটি সামরিক পরিবহন বিমান করে ফিলিপিন্সের মাটিতে ফিরে আসে।

এর মাধ্যমে মার্কিন উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রতীকগুলো ফিরে পেল ফিলিপিনরা। এই প্রতীকগুলো ফিরে পেতে কয়েক দশক ধরে দেনদরবার করে আসছিল ম্যানিলা, অবশেষে তার অবসান হলো বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

ম্যানিলার একটি বিমান ঘাঁটিতে নামানো ঘণ্টাগুলো গত শনিবার ফিলিপিন্সের মধ্যাঞ্চলীয় দ্বীপ সামারের একটি গির্জায় ফেরত পাঠানো হবে।

ঘণ্টাগুলো বাক্স থেকে বের করে প্রদর্শনীর জন্য রানওয়েতে রাখা হলে বালাঙ্গিগার প্রধান যাজক ফাদার লেন্টয় তাইবাকো স্থানীয় এক টেলিভিশনকে বলেন, ‘আমি কিছুটা উত্তেজিত ও কিছুটা আবেগপ্রবণ বোধ করছি। অবশেষে আমরা ঘণ্টাগুলো দেখলাম।’

এই দ্বীপটিতেই দখলদার মার্কিন সৈন্যদের বিরুদ্ধে শেষবারের মতো প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল স্থানীয়রা। ১৯০১ সালের এক ঘটনায় ফিলিপিনো যোদ্ধাদের চোরাগোপ্তা হামলায় ৪৮ মার্কিন সৈন্য নিহত হওয়ার পর এর প্রতিশোধ নিতে কয়েকশ সম্ভবত কয়েক হাজার ফিলিপিনকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল মার্কিন বাহিনী।

এই ঘণ্টাগুলোর মধ্যে দুটি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইওমিংয়ের একটি বিমান ঘাঁটিতে প্রদর্শনরত অবস্থায় ছিল, অন্যগুলো দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একটি জাদুঘরে রাখা ছিল।

ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্টদের, যাজক ও ঐতিহাসিকদের বহু বছরের তদবিরের পর এই ঘণ্টাগুলো ফেরত দেওয়া হলো। ওয়াইওমিংয়ের সাবেক সামরিক সদস্যরা ও আইনপ্রণেতারা একটি স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙে ঘণ্টাগুলো ফেরত দেওয়ার বিরোধিতা করছিলেন, এর ফলে এগুলো সরানোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আইন সভায় একটি প্রস্তাবও পাস হয়েছিল।

১৮৯৯-১৯০২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ফিলিপিন্স-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের শেষ দিকে বালাঙ্গিগার লড়াই হয়েছিল। এই পর্বটি ছিল মার্কিন উপনিবেশবাদের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়।

ঐতিহাসিকরা জানিয়েছেন, মার্কিন বাহিনীর ওপর আকস্মিক আক্রমণের সংকেত দিতে ঘণ্টাগুলো বাজানো হতো, এর প্রতিশোধ নিতে মার্কিন বাহিনী ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নারী ও শিশুসহ বহু লোককে হত্যা করেছিল।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তেকে ঘণ্টাগুলো ফেরত দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ওই সময় তার বার্ষিক স্টেট অব দ্য ন্যাশন ভাষণে দুতার্তে ঘণ্টাগুলো ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close