আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৭ নভেম্বর, ২০১৮

‘খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দেননি সৌদি যুবরাজ’

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যায় সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত বলে যে অভিযোগ আছে এবার তা অস্বীকার করেছেন দেশটির এক সরকারি কৌঁসুলি। বিবিসি জানায়, খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ যুবরাজ নন, বরং এক ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা দিয়েছিলেন বলেই জানিয়েছেন এই কৌঁসুলি। গত ২ অক্টোবর তুরস্কে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর আর বেরিয়ে আসেনি খাশোগি। তার হত্যাকান্ড নিয়ে সৌদি আরব একাধিকবার তাদের বিবৃতি পাল্টেছে। সবশেষে সৌদি আরব খাশোগি হত্যা পরিকল্পিত ছিল বলেও স্বীকার করে।

বৃহস্পতিবার সরকারি সৌদি প্রেস এজেন্সিতে এক বিবৃতিতে দেশটির কৌঁসুলি সৌদ আল মোজেব জানান, ওই খুনের ঘটনায় ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং সৌদি আরব ৫ জনের মৃত্যুদন্ড চাইছে। ওদিকে, মোজেবের ডেপুটি শালান বিন রাজিহ শালান বৃহস্পতিবারেই রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, খাশোগিকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সৌদি আরবের উপ গোয়েন্দা প্রধান জেনারেল আহমেদ আল আসিরি ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে যে আলোচক দলটিকে পাঠিয়েছিলেন সে দলের প্রধানই হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তদন্ত থেকে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানান তিনি।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এ ব্যাপারে কিছু জানতেন না বলে শালান দাবি করেন। ২ অক্টোবরে সৌদি এজেন্টদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির পর খাশোগিকে ইনজেকশন দেওয়া হয় এবং তার মৃত্যুর পর দেহ টুকরো করা হয়। এরপর তা সরিয় ফেলা হয়। তার দেহাবশেষ কোথায় আছে তা জানতে তদন্ত চলছে বলেও জানান শালান। তবে খুনের ঘটনায় যারা অভিযুক্ত হয়েছে তাদের পরিচয় জানাননি তিনি। সৌদি যুবরাজ নিজেও খাশোগি হত্যাকান্ডে তার কোনো রকম ভূমিকা থাকার কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন। যদিও সমালোচকরা বলছেন, তিনি এ খুনের ঘটনা জানতেন না তা হতে পারে না।

১৭ সৌদির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা : সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যায় ভূমিকা থাকায় ১৭ সৌদির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দিয়েছে। গত মাসে খাশোগি খুনের পর এটিই সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম কড়া পদক্ষেপ।

নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাবেক শীর্ষ সহযোগী সৌদ আল কাহতানি এবং সৌদি কাউন্সেল জেনারেল মোহাম্মদ আলোতায়িবি। ‘গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্ট’-এর আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করা হবে। মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন এবং দুর্নীতির মতো অপরাধের ক্ষেত্রে এ আইনের আওতায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়ে থাকে। নিষেধাজ্ঞাকবলিত অন্যদের মধ্যে আছেন কাহতানির সহযোগী মাহের মুতারেব। এ বছর যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে রাষ্ট্রীয় সফরকালে সৌদি যুবরাজ বিন সালমানের সঙ্গে মুতারেবকে ছবিতে দেখা গেছে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভ মিউচিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যারা যুক্তরাষ্ট্রে বাস করা একজন সাংবাদিককে (খাশোগি) টার্গেট করে খুন করেছে তাদের কৃতকর্মের পরিণতি ভোগ করতেই হবে।’

গত ২ অক্টেবর তুরস্কে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর আর বেরিয়ে আসেনি খাশোগি। তার হত্যাকান্ড নিয়ে সৌদি আরব একাধিকবার তাদের বিবৃতি পাল্টেছে। সবশেষে সৌদি আরব খাশোগি হত্যা পরিকল্পিত ছিল বলেও স্বীকার করে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, ওয়াশিংটন ঘটনাটি আসলেই কি ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। খাশোগি হত্যায় দায়ী প্রত্যেককেই জবাবদিহি করানো হবে। সৌদি আরব সরকারকেও রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী কিংবা সাংবাদিকদের হত্যার টার্গেট করা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মিউচিন মন্তব্য করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close