আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৪ নভেম্বর, ২০১৮

উত্তর কোরিয়ার ‘১৩টি অঘোষিত ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি’ আছে

যুক্তরাষ্ট্রের একটি থিংকট্যাংক উত্তর কোরিয়ার ভেতর ১৩টি অঘোষিত ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি চিহ্নিত করার দাবি করেছে।

দেশটিতে এ রকম সম্ভাব্য ২০টির মতো ঘাঁটি আছে বলেও অনুমান তাদের।

মার্কিনিদের সঙ্গে আলোচনার মধ্যেই ওই ঘাঁটিগুলোর কয়েকটিতে রক্ষণাবেক্ষণ ও ছোটখাটো উন্নয়ন কাজ লক্ষ্য করা গেছে বলেও জানিয়েছেন ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) গবেষকরা।

তাদের এ ভাষ্য পিয়ংইয়ংয়কে পারমাণবিক অস্ত্র ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পথ থেকে সরিয়ে আনার মার্কিন প্রত্যাশাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

চলতি বছরের জুনে সিঙ্গাপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন এক ঐতিহাসিক চুক্তিতে কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। উত্তর কোরিয়া কীভাবে ও কতদিনের মধ্যে নিরস্ত্রীকরণ সম্পন্ন করবে সে প্রসঙ্গে সুনির্দিষ্ট কিছু না থাকায় চুক্তিটির কার্যকারিতা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্লেষকদের সন্দেহও আছে। দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় অগ্রগতিও খুব সামান্য বলে জানাচ্ছে রয়টার্সও।

জুনের সম্মেলনের পরপরই টুইটারে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘উত্তর কোরিয়া আর পারমাণবিক হুমকি নয়।’ পারমাণবিক শক্তির সামর্থ্য অর্জনের কাজ ‘পূর্ণাঙ্গ’ হয়েছে ঘোষণা দিয়ে উত্তর কোরিয়াও চলতি বছর তাদের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ কর্মসূচি ও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা-নিরীক্ষা স্থগিতের কথা জানায়। যদিও মার্কিন ও দক্ষিণ কোরীয় আলোচকরা এখন পর্যন্ত পিয়ংইয়ংয়ের কাছ থেকে তাদের অস্ত্র কর্মসূচির আকার ও ক্ষমতা সম্পর্কে সুনিশ্চিত তথ্য আদায় করতে পারেননি। পারেননি বর্তমান মজুদ অস্ত্র না মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি আদায় করতেও।

উত্তর কোরিয়া এরই মধ্যে তাদের পুঙ্গি-রি পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্র ও সোহে ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিন পরীক্ষা স্থাপনালয় বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

ওয়াশিংটন পাল্টা কার্যকর ব্যবস্থা নিলে আরো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র বন্ধ এবং সেগুলোতে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকের প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পিয়ংইয়ং।

যদিও ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার কিংবা যেসব শাস্তিমূলক পদক্ষেপ তারা আগে নিয়েছিল, তা তুলে নেওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

সিএসআইএস উত্তর কোরিয়ায় যেসব গোপন ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটির সন্ধান পেয়েছে সেগুলো কিম-ট্রাম্প সম্মেলনের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া প্রতিশ্রুতির দিকেই ইঙ্গিত করেন।

‘যদি চেয়ারম্যান কিম সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধসহ তার দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি রাখেন, তাহলে উত্তর কোরিয়া ও এর জনগণের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ পড়ে আছে বলে আগেই সুস্পষ্ট করেছিলেন প্রেসিডেন্ট’ বলেছেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্সিয়াল ব্লু হাউসের মুখপাত্র কিম ইয়ু কিয়োম জানান, ওয়াশিংটন ও সিউলের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সামরিক উপগ্রহ ব্যবহার করে উত্তরের ঘাঁটিগুলোর ওপর কড়া নজর রাখছে। সিএসআইএসের প্রতিবেদনে ‘নতুন কিছু নেই’ বলেও মন্তব্য তার।

এসব গোপনীয় ঘাঁটির মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া ‘প্রতারণা’ করছে, এমন ইঙ্গিতেরও সমালোচনা করেন কিয়োম। ‘উত্তর কোরিয়া কখনোই তাদের সামরিক ঘাঁটি বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেয়নি। তারা এমন কোনো চুক্তি করেনি, এমন কোনো আলোচনাও হয়নি, যা তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিগুলো বন্ধে বাধ্য করবে’ বলেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, সিএসআইএসের প্রতিবেদনে যেসব ঘাঁটির কথা এসেছে, এগুলোর সঙ্গে তারা আগে থেকেই পরিচিত।

যদিও সেসব ঘাঁটিতে সাম্প্রতিক সময়ে কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে কি না, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close