আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৬ অক্টোবর, ২০১৮

‘শত্রুতা বন্ধে’ গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান ট্রাম্পের

শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের ঠিকানায় ডাকযোগে সন্দেহজনক বিস্ফোরক দ্রব্য পাঠানোর ঘটনায় তোলপাড়ের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘শেষ হবে না এমন শত্রুতা বন্ধে’ গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার রাতে উইসকনসিনে এক সমাবেশে তিনি এসব বিস্ফোরক পাঠানোর সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের শিগগিরই আটক করার প্রতিশ্রুতিও দেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, সিএনএনের কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি ঠিকানায় আসা সম্ভাব্য ‘পাইপবোমা’ উদ্ধারের পর ট্রাম্প এসব কথা বলেন।

ডাকযোগে পাঠানো বিস্ফোরকগুলোর কোনোটিই বিস্ফোরিত হয়নি। কারা এগুলো পাঠিয়েছে, তাদের সন্ধানে অভিযানও শুরু করেছে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। সন্দেহজনক ওই বিস্ফোরকগুলো নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি ও ফ্লোরিডার বিভিন্ন ঠিকানায় পাঠানো হয়েছিল বলে কর্তৃপক্ষ বুধবার জানিয়েছে। উইসকনসিনের সমাবেশে ট্রাম্প ‘ধারাবাহিক নেতিবাচক এবং প্রায়ই মিথ্যা গল্প ও আক্রমণ শানানো বন্ধের’ জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান।

যাদের ঠিকানায় সন্দেহজনক বিস্ফোরক দ্রব্য পাঠানো হয়েছে সমাবেশে তাদের নিয়ে ট্রাম্প সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করেননি বলেও জানিয়েছে বিবিসি। গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে একহাত নেওয়া ট্রাম্পের সর্বশেষ এ মন্তব্যকেও ‘ভন্ডামিপূর্ণ’ অ্যাখ্যা দিয়ে সমালোচকরা বলছেন, বিরোধী পক্ষ ও গণমাধ্যমকে দমিয়ে রাখতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রায়ই এ ধরনের ‘বিদ্বেষমূলক ভাষা’ ব্যবহার করেন। এর আগে সিএনএনের প্রেসিডেন্ট জেফ জাকার ‘ব্যবহৃত শব্দ যে সমস্যা তৈরি করতে পারে’ এটি না বোঝায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারির সমালোচনা করেছেন।

বলেছেন, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তাদের ধারাবাহিক আক্রমণের গুরুত্বের বিষয়টি বোঝার ক্ষেত্রে পুরোপুরি ঘাটতিতে আছে হোয়াইট হাউস। ওবামা ও হিলারি ছাড়াও সিআইএ-র সাবেক পরিচালক জন ব্রেনান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার, ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেস সদস্য মেক্সিন ওয়াটারস, বিনিয়োগকারী জর্জ সরোসের ঠিকানায় এসব বিস্ফোরক এসেছে। বুধবার সকালে ব্রেনানের নামে পাঠানো প্যাকেটটি সিএনএনের নিউইয়র্ক কার্যালয়ের মেইল রুমে পাওয়ার পরপরই কার্যালয়টি খালি করে ফেলা হয়।

এ ধরনের আরো একটি প্যাকেট সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেনকে পাঠানো হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে; এফবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তারা এখন সেটিও খুঁজে দেখছেন।

যাদের ঠিকানায় এসব সন্দেহজনক বিস্ফোরক পাওয়া গেছে এরা সবাই রক্ষণশীল রাজনীতিকদের বিশেষ করে ট্রাম্পের ধারাবাহিক সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্টের সেসব সমালোচনা সহিংসতা উসকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাট নেতা। ট্রাম্পের সমর্থকরা অবশ্য বলছেন, নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট টানতে ডেমোক্র্যাটরাই এ ধরনের ডাকবোমার নাটক সাজিয়েছে।

এ অভিযোগের সমর্থনে এখনো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি। পুলিশ কোনো সন্দেহভাজন সম্পর্কে তথ্যও দেয়নি।

সন্দেহজনক এ বিস্ফোরকগুলো ম্যানিলা খামে বাবল র‌্যাপে মুড়িয়ে পাঠানো হয়েছে। ঠিকানা লেখা হয়েছে কম্পিউটারে মুদ্রিত লেবেলে। প্রত্যেকটিতেই প্রেরক হিসেবে রয়েছে ডেমোক্র্যাট জাতীয় পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ডেবি ওয়াসেরম্যান শুলজের নাম। অবশ্য সবই তার নাম ভুল বানানে মুদ্রিত হয়েছে।

ফ্লোরিডার এ কংগ্রেসম্যান এক বিবৃতিতে তার নাম যেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে তাতে ‘অত্যন্ত বিরক্ত’ হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

সিএনএনের কার্যালয়ে পাঠানো প্যাকেটটির ‘খামের ভেতর সাদা পাউডার’ পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। ওই পাউডারও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্ক পুলিশের কমিশনার জেমস ও’নিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close