আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৮ অক্টোবর, ২০১৮

‘আপাতত ব্রিটেনই ব্রিটেনের সঙ্গে দরকষাকষি করছে’

ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে ইইউয়ের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়ে চলেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে চলেছেন। ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে প্রাথমিক অগ্রগতি সত্ত্বেও ‘তীরে এসে তরি ডুবতে চলেছে’ বলে আশঙ্কা বেড়ে চলেছে। বুধবার থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলন শুরু হচ্ছে। তার আগেই চুক্তি চূড়ান্ত করার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিল। তবে সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। বুধবার সন্ধ্যায় নৈশভোজের আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ইইউ নেতাদের সামনে তার বক্তব্য দেবেন।

ব্রিটেনের সরকারের মধ্যে কোন্দল নিয়ে ইইউয়ের অনেক নেতাই তিতিবিরক্ত। ব্রিটেনের ইইউ ত্যাগের সময় যত এগিয়ে আসছে, চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তাও তত বাড়ছে। এ অবস্থায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তাদের সাফ বক্তব্য হলোÑ হয় তাকে চুক্তির খসড়ার পক্ষে নিজের দেশে যথেষ্ট সমর্থন আদায় করতে হবে অথবা আগামী মার্চে চুক্তি ছাড়াই ব্রিটেনকে ইইউ থেকে বিদায় নিতে হবে। বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিদিয়ে রাইন্ডার্স বলেন, ‘আপাতত ব্রিটেনই ব্রিটেনের সঙ্গে দরকষাকষি করছে।’

বাকি সব বিষয়ে অগ্রগতি হলেও আয়ারল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের মধ্যে স্থলসীমান্ত নিয়ে মতবিরোধ কিছুতেই কাটছে না। শান্তি বজায় রাখতে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ এড়ানোর কিছু প্রস্তাব দিয়েছে ইইউ। তবে তার ফলে উত্তর আয়ারল্যান্ড ও ব্রিটেনের মূল ভূখন্ডের মধ্যে কিছু নিয়ন্ত্রণ চালু করতে হবে। তেরেসা মে তা মানতে নারাজ। বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন প্রস্তাবের পক্ষে সংসদে সমর্থন আদায় করাও তার পক্ষে কার্যত অসম্ভব। তবে এ পর্যন্ত কোনো খসড়া চুক্তির পক্ষেই তিনি নিজের দল ও সংসদের সমর্থনের আশ্বাস পাননি।

এমন প্রেক্ষাপটে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের আশঙ্কা দেখছেন ইইউ নেতারা। ইইউ পরিষদের প্রধান ডোনাল্ড টুস্ক ‘গর্ডন নট’ বা মারাত্মক জটের উল্লেখ করেছেন, যা ছাড়ানো কার্যত অসম্ভব। অন্তত বর্তমান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তার দুর্বলতার কারণে সেই ক্ষমতা রাখেন না, এমন প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত এই মন্তব্যে লুকিয়ে রয়েছে। ইইউ প্রকাশ্যে এমন নৈরাশ্য দেখালে তেরেসা মে চুক্তির পক্ষে সমর্থন আদায় করতে পারবেনÑ এমন সম্ভাবনাও দেখছেন অনেকে। কারণ তার ফলে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, ব্রিটেনের পক্ষে নতুন করে আর কোনো ছাড় আদায় করা সম্ভব নয়। কিছু সূত্র অনুযায়ী, সদিচ্ছার প্রতীক হিসেবে ২০২০-এর বদলে ২০২১ সাল পর্যন্ত ব্রিটেনকে শুল্ক ইউনিয়ন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ বাজারে থেকে যাওয়ার প্রস্তাব দিতে চলেছে ইইউ।

২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার আগে ব্রিটেন ও ইইউ সদস্য দেশগুলোকে এ-সংক্রান্ত চুক্তি অনুমোদন করতে হবে। তাই সময় খুব কম। তা সত্ত্বেও ইইউ নেতারা ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে যে নভেম্বরে ব্রেক্সিট-সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের কোনো অর্থ আছে কিনা, বুধবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেই তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি কোনো নতুন প্রস্তাব না আনলে অগ্রগতির সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়বে বলে তারা মনে করছেন। সেক্ষেত্রে জরুরিভিত্তিতে কিছু আইন প্রণয়ন করে ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’-এর জন্য প্রস্তুতি শুরু হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close