আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৭ অক্টোবর, ২০১৮

অ্যাসাঞ্জের ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ অব্যাহত রয়েছে : ইকুয়েডর

উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয় অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিল ইকুয়েডর। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোস ভ্যালেন্সিয়া অ্যামোরেসকে উদ্ধৃত করে রুশ বার্তা সংস্থা স্পুটনিকের অনলাইন ভার্সনে এই খবর জানানো হয়েছে। ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অ্যাসাঞ্জের প্রত্যক্ষ আলোচনার মধ্য দিয়ে তার বিষয়টি মীমাংসা করা হবে।

বিশ্বজুড়ে ক্ষমতা উন্মোচনকারী বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের এডিটর-ইন-চিফ জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে ২০১২ সাল থেকে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে বাস করছেন। সুইডেনে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠার পর সে বছর জুন থেকে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসের আশ্রয়ে আছেন তিনি। তবে ধর্ষণের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন অ্যাসাঞ্জ। তার আশঙ্কা, সুইডেনে গেলে সুইডিশ সরকার তাকে গ্রেফতার করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে প্রত্যর্পণ করবে। আর যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বিচারের নামে মৃত্যুদ- দেবে।

জুনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মরেনো অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয়ের সুরক্ষার অবসান ঘটাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। তবে এখনো সেরকম কোনো খবর জানা যায়নি। এমন সময়ে সংবাদমাধ্যম ইউনিভার্সোকে জোস ভ্যালেন্সিয়া অ্যামোরেস বললেন, ‘একজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে অ্যাসাঞ্জের স্ট্যাটাস বলবৎ রয়েছে।’ তিনি জানিয়েছেন, অ্যাসাঞ্জের ইস্যুটি তার আইনজীবীর সঙ্গে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষ সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়ে নিষ্পত্তি করা হবে।

চলতি বছরেই অ্যাসাঞ্জের ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেয় দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতিতে হস্তক্ষেপ করে এমন বার্তা আদান-প্রদান করছিলেন তিনি। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মরেনো জানান, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে অবশ্যই ইকুয়েডরের লন্ডন দূতাবাস ছাড়তে হবে বলে। মরেনো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি না যে অ্যাসাঞ্জ হ্যাকার।

আমরা নিশ্চিত করতে চাই যেন তার জীবনের ঝুঁকি না থাকে। আমরা তার আইনজীবী ও ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। একই দিন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের দফতর থেকে জানানো হয়, ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্টের যুক্তরাজ্য সফরের সময়ে এই বিষয়ে কোনো আলাপ ওঠেনি। অ্যাসাঞ্জের মামলা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে বলেও জানায় মের দফতর। অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী সে সময় বলেন, ‘অ্যাসাঞ্জ ব্রিটিশ সরকারের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। তাদের বিচার মেনে নেবেন। কিন্তু মার্কিন সরকারের অবিচারের প্রক্রিয়া মুখোমুখি হবেন না তিনি।’

দূতাবাসের রুদ্ধ পরিবেশে অ্যাসাঞ্জের স্বাস্থ্যহানি ঘটছে বলে খবর আসতে শুরু করেছে বেশ কয়েক মাস ধরে। সবশেষ চলতি মাসে স্বাস্থ্য মারাত্মক খারাপ হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন তার এক আইনজীবী। অস্ট্রেলিয়ার আইজনজীবী ও উইকিলিকসের উপদেষ্টা গ্রেগ বার্নস বলেছেন, লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে মুক্ত না হলে তার স্বাস্থ্যের এমন অবনতি পারে যেখানে তার মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম আইটিওয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী দলের সদস্য বার্নস এই মন্তব্য করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close