আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৩ অক্টোবর, ২০১৮

মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকীতে মোদির শ্রদ্ধা

ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর ১৪৯তম জন্মবার্ষিকী ছিল গতকাল। দিনটি উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকে দিল্লির রাজঘাটে চলেছে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন পর্ব। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিরোধী নেতা সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীসহ রাজনৈতিক অঙ্গনের অনেকে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন। গান্ধীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেশজুড়ে নানা অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে।

গান্ধী ভারতে এবং বিশ্বজুড়ে মহাত্মা ও বাপু নামে পরিচিত। ২ অক্টোবর তার জন্মদিন ভারতে গান্ধী জয়ন্তী হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। ২০০৭ সালের ১৫ জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা করা। জাতিসংঘের সব সদস্য দেশ এ দিবস পালনে সম্মতি জ্ঞাপন করে। মহাত্মা গান্ধীর পারিবারিক নাম মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। ১৮৬৯ সালে পোরবন্দরের হিন্দু মোধ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা করমচাঁদ গান্ধী ছিলেন পোরবন্দরের দেওয়ান। মা পুতলিবা করমচাঁদের চতুর্থ স্ত্রী ছিলেন। ধার্মিক মায়ের সঙ্গে এবং গুজরাতের জৈন প্রভাবিত পরিবেশে থেকে গান্ধী ছোটবেলা থেকেই জীবের প্রতি অহিংসা, নিরামিষ ভোজন, আত্মশুদ্ধির জন্য উপবাসে থাকা, বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও সম্প্রদায়ের পারস্পরিক সহিষ্ণুতা ইত্যাদি বিষয় শিখতে শুরু করেন।

১৮৮৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে মহাত্মা গান্ধী তার বাবা-মায়ের পছন্দে কস্তুরবা মাখাঞ্জিকে (কাস্তুবাই নামেও পরিচিত ছিলেন) বিয়ে করেন। তাদের চার পুত্রসন্তান জন্মায় যাদের নাম হরিলাল গান্ধী, (জন্ম ১৮৮৮) মনিলাল গান্ধী, (জন্ম ১৮৯২) রামদাস গান্ধী (জন্ম ১৮৯৭) এবং দেবদাস গান্ধী (জন্ম ১৯০০) সালে। ১৮ বছর বয়সে ১৮৮৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে যান মহাত্মা গান্ধী।

একজন আইনজীবী হিসেবে, গান্ধী প্রথম তার অহিংস শান্তিপূর্ণ নাগরিক আন্দোলনের মতাদর্শ প্রয়োগ করেন দক্ষিণ আফ্রিকায় নিপীড়িত ভারতীয় নাগরিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয়দের ভোটাধিকার ছিল না। এই অধিকার আদায়ের বিল উত্থাপনের জন্য তিনি আরো কিছুদিন দেশটিতে থেকে যান। বিলের উদ্দেশ্য সিদ্ধি না হলেও এই আন্দোলন সেদেশের ভারতীয়দের অধিকার সচেতন করে তুলেছিল। ১৮৯৪ সালে গান্ধী নাটাল ইন্ডিয়ান কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের মাধ্যমে সেখানকার ভারতীয়দের রাজনৈতিকভাবে সংঘবদ্ধ করেন। ১৮৯৭ সালের জানুয়ারিতে ভারতে এক সংক্ষিপ্ত সফর শেষে ফিরে আসার পর এক শ্বেতাঙ্গ মব তাকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। গান্ধী এই মব সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি। কারণ তার মতে, কারো ব্যক্তিগত ভুলের জন্য পুরো দলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়াকে তিনি সমর্থন করেন না।

১৯৪২ সালে ভারত ছাড় আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান গান্ধী। বিভিন্ন কারণে বেশ কয়েকবার দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারতে কারাবরণ করেন। মহাত্মা গান্ধী সব পরিস্থিতিতেই অহিংস মতবাদ এবং সত্যের ব্যাপারে অটল থেকেছেন। তার নিজের পরিধেয় কাপড় ছিল ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় ধূতি এবং শাল, যা তিনি নিজেই চরকায় বুনতেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close