আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সিরিয়া থেকে পালিয়ে বাগদাদির আফগানিস্তানে আশ্রয়!

জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি সিরিয়া থেকে পালিয়ে আফগানিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে। ইরান হয়ে বাগদাদি আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার প্রদেশে পৌঁছায়। লন্ডনভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম আশরাক আল-আওসাত এ খবর জানিয়েছে।

খবরে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, বাগদাদি ইরানের জাহেদান শহর হয়ে সীমান্ত দিয়ে আফগানিস্তানে প্রবেশ করে। সূত্র জানায়, ইরানের সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আইএস জাহেদান শহরে নিজেদের যোদ্ধাদের রাখতে পেরেছে। মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর জানায়, সিরিয়ায় আইএস ও বিদ্রোহীবিরোধী যুদ্ধে দেশটির সরকারকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়েছে ইরান। কিন্তু আইএসকে সহযোগিতার অভিযোগ এই প্রথম উঠে এলো।

আশরাক আল-আওসাত পত্রিকার খবরে ধারণা করা হয়েছে, গত সপ্তাহে সিরিয়ায় শুরু হওয়া অপারেশন রাউন্ডআপ এড়াতেই বাগদাদি আফগানিস্তানে পালিয়ে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আইএসবিরোধী লড়াইয়েই জোট ও মার্কিন সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স (এসডিএফ) এই অভিযান শুরু করেছে। সিরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল থেকে আইএসকে উৎখাতে চলমান অভিযানের তৃতীয় পর্যায় এটি।

ইরাক সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে রয়েছে হাজিন, আল-বাগৌজ ও আল-সুসা শহর।

আইএস নেতা বাগদাদিকে নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন সময় পরস্পরবিরোধী খবর প্রকাশিত হয়েছে। গত এক বছরের মধ্যে আগস্টে প্রথম অডিও বার্তা প্রকাশ করা হয় বলে দাবি করা হয়েছে। ৫৫ মিনিটের ওই অডিও বার্তায় বাগদাদি কানাডা ও ইউরোপে সাম্প্রতিক হামলাকারীকে আকর্ষণীয় সিংহ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আইএস অনুসারীদের তিনি বোমা, ছুরি ও গাড়ি নিয়ে হামলার চালানোর আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি মুসলমানদের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানান। এতে প্রমাণ হয় বার্তাটি সম্প্রতি রেকর্ড করা হয়েছে। কিছুদিন আগেও আইএস সিরিয়া ও ইরাকে বেশ কিছু ভূখন্ড নিয়ন্ত্রণ করত। কিন্তু আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় উভয় দেশ তাদের উৎখাত করেছে।

২০১৪ সালে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান শহর মসুল দখল করার পর বিশ্বের মুসলিমদের শাসক হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করে বাগদাদি। ধারণা করা হয়েছিল, আইএসের স্বঘোষিত খিলাফতের পতনের পর বাগদাদি ইরাক-সিরিয়া সীমান্তে আত্মগোপনে রয়েছে।

বাগদাদি ২০১৪ সালে একবার নিজের ছবি তুলতে দিয়েছিল। জনসমক্ষে বক্তব্য রাখাটাও তার জন্য বিরল ঘটনা। দীর্ঘ সময় ধরে লোকচক্ষুর বাইরে থাকায় বাগদাদি সম্পর্কে একেক সময় একেক গুজব পাখা মেলেছে। কখনো বলা হয়েছে, সে মারা গেছে, কখনো বলা হয়েছে সে ধরা পড়েছে আবার কখনো দাবি করা হয়েছে বাগদাদি মারাত্মকভাবে আহত। কখনোবা সিরীয় বাহিনীর হাতে আটক হওয়া আবার কখনো তাকে বিষ খাইয়ে দেওয়ার কথাও বাতাসে ছড়িয়েছে।

গত জুনে বাগদাদির মৃত্যুর খবরকে ‘শতভাগ নিশ্চিত’ দাবি করেছিল রাশিয়ার কর্মকর্তারা। কিন্তু যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে পেন্টাগন তা মেনে নিতে পারেনি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই জানিয়েছে, বাগদাদি মসুল ও রাক্কা থেকে জীবিত অবস্থায় বেরিয়ে গিয়েছে এবং এখনো সক্রিয় রয়েছে। বুধবারের বার্তাও প্রমাণ করে তিনি এখনো বেঁচে আছে। এর আগে এই বছরের শুরুতে আইএসের সংবাদমাধ্যম জানায়, সিরিয়ার হোমস প্রদেশে বাগদাদির এক ছেলে নিহত হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close