আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

রয়টার্সের সাংবাদিকদের রায়ের পক্ষে সু চির সাফাই

কারাদন্ডিত রয়টার্সের দুই সাংবাদিক তাদের সাত বছরের দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন এবং আদালতের এ রায়ের সঙ্গে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি।

বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামের হ্যানয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো নিয়ে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) এক সম্মেলনে সু চি এসব কথা বলেন বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

গণতান্ত্রিক নেতা হিসেবে দুই সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানোর সিদ্ধান্তে আপনার অনুভূতি কি, ফোরাম মর্ডারেটরের এমন প্রশ্নের জবাবে সু চি বলেন, সাংবাদিক হিসেবে তাদের কারাদন্ড দেওয়া হয়নি, তাদের কারাদন্ড হয়েছে কারণ আদালত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা দাফতরিক গোপনীয়তা আইন ভেঙেছে। ‘বেশির ভাগ মানুষ ওই রায়ের সারসংক্ষেপ পড়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে, এর (রায়) সঙ্গে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক আছে অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের। আমরা যদি আইনের শাসনে বিশ্বাস করি, তাহলে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও এই বিচার কেন ভুল হয়েছে তা তুলে ধরার পুরো সুযোগ আছে তাদের।’

চলতি মাসের শুরুতে মিয়ানমারের আদালত রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) ও কিয়াও সো ওকে (২৮) সাত বছরের কারাদন্ড দেয়। ঔপনিবেশিক আমলের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আন্তর্জাতিক মহল দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দেওয়া এ রায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। বিশ্বজুড়ে রয়টার্সের এ দুই সাংবাদিককে মুক্তি দেওয়ার দাবি ওঠে। রোহিঙ্গা গ্রামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যাযজ্ঞ ও বর্বরতা নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে তা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছিলেন এই দুই সাংবাদিক। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও ওই দুই সাংবাদিককে ছেড়ে দিতে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সাংবাদিকদের মুক্তির বিষয়ে পেন্সের আহ্বানের বিষয়ে জানতে চাইলে শান্তিতে নোবেলবিজয়ী এ নেত্রী বলেন, সমালোচকরা কি এখানে আইনের কোনো ধরনের অপপ্রয়োগ খুঁজে পেয়েছেন?

‘উন্মুক্ত আদালতে মামলাটি চলেছে, যারা যেতে চেয়েছে ও উপস্থিত হতে চেয়েছে তাদের সবার জন্য শুনানিও উন্মুক্ত ছিল। কারো যদি মনে হয়, সেখানে আইনের অপপ্রয়োগ হয়েছে, তাহলে তাদের তা দেখিয়ে দিতে বলব আমি,’ বলেছেন সু চি।

ডব্লিউইএ করা সু চির এসব মন্তব্য বিষয়ে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র জ হাতোয়ের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। হ্যানয়ের ওই আয়োজনেই বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের এ নোবেল বিজয়ী নেত্রী বলেছিলেন, তার সরকার ‘রাখাইনের পরিস্থিতিকে হয়তো আরো ভালোভাবে সামাল দিতে পারত’। রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখ হওয়া রায় নিয়ে মিয়ানমারের জনগণের মধ্যেও স্পষ্ট বিভক্তি লক্ষ করা গেছে। সু চির একসময়ের ঘনিষ্ঠ, মিয়ানমারের খ্যাতনামা রাজনৈতিক বন্দি প্রয়াত উইন তিনের প্রতিষ্ঠিত একটি ফাউন্ডেশন বুধবার ওয়া লোন ও কিয়াও সো ও’কে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দুই সাংবাদিকের শাস্তির বিরোধিতা করে তাদের দ্রুত মুক্তি দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close