আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

বসরায় বিক্ষোভ পুড়ল ইরানি কনসুলেটও

মৌলিক সেবার ঘাটতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলা বিক্ষোভের আগুন থেকে রেহাই পেল না ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বসরার ইরানি কনসুলেট ভবনও। শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ শহরটিতে বিক্ষোভকারীরা ইরানি পতাকায় আগুন ধরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি রাজনীতিতে তেহরানের প্রভাব বিস্তারের প্রতিবাদে স্লোগানও দেয়। পাঁচ দিন ধরে চলা এ বিক্ষোভ থামাতে শুক্রবার রাত ৯টা থেকে কর্তৃপক্ষ সান্ধ্য আইন জারি করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এদিনের বিক্ষোভেও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত এক বিক্ষোভকারী নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছে।

গত সপ্তাহের সোমবার থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর থেকে ইরাকের শিয়াদের সঙ্গে তেহরানের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ইরানের কনসুলেট ভবনকে বাগদাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি ভবনের মতোই মনে করে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। কনসুলেট ভবন জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমী। ‘আগ্রাসী’ এ হামলায় ‘বিপুল ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

ভবনে আগুন দেওয়ার আগেই কনসুলেটের কর্মীরা সব নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন বলে ধারণা ইরানি গণমাধ্যমগুলোর।

শিয়া অধ্যুষিত বসরার দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দারা ভেঙে পড়া অবকাঠামো, তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে আসছেন। শহরটির ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা বলছেন, সাপ্লাইয়ের পানিতে লবণ চুইয়ে পড়ায় তা পানের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে; যে কারণে গ্রীষ্মের গরমের মধ্যে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

পানি পানে কয়েকশত লোক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই বাসিন্দারা সহিংস বিক্ষোভ শুরু করেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষোভকারীরা প্রাদেশিক সরকারের প্রধান কার্যালয়ে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেয়। এদিন তারা আরো কয়েকটি সরকারি ভবনে ভাঙচুর চালায় এবং নগরীর প্রধান সড়কগুলো অবরোধ করে।

তারা রাষ্ট্র পরিচালিত ‘ইরাকিয়া টিভি’ ভবনের পাশাপাশি প্রভাবশালী শিয়া মিলিশিয়া দল আসাইব আহল আল হকের কার্যালয়েও আগুন দেয়।

বিক্ষোভকারীরা প্রধান প্রধান সব সড়ক অবরোধ করায় বসরার বাইরের গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর ‘উম কাসর’ এর সব কার্যক্রমও বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ আছে।

ইরাকের রাজস্ব আয়ের প্রায় ৯৫ শতাংশই এই বন্দর থেকে আসে। এই বন্দর দিয়েই খাদ্যশস্য এবং জীবনধারণে প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ পণ্য আমদানি করা হয়।

‘উম কাসর’ বন্ধ থাকলেও গভীর সমুদ্রের একটি টার্মিনাল দিয়ে এখনো তেল রফতানি চলছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বিক্ষোভের মুখে শুক্রবার ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি বসরায় মৌলিক সেবার উন্নয়নে দ্রুত অর্থ ছাড় করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইরাকের প্রভাবশালী শিয়া নেতা আয়াতুল্লাহ আল সিস্তানি বসরার অস্থিরতার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের দোষ দিয়েছেন।

সমস্যা মোকাবিলায় নতুন একটি সরকার গঠনের ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি, যেটি ‘পূর্বসূরিদের চেয়ে ভিন্ন হবে’।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close