আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৭ আগস্ট, ২০১৮

বিদেশিদের কাছে বাড়ি বিক্রি নিষিদ্ধ করল নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ড বিদেশি নাগরিকদের কাছে বাড়ি বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। নিউজিল্যান্ডের মানুষের আবাসন সংকটের সমাধান করতে এবং গৃহায়ন ব্যবস্থাকে সাশ্রয়ী করতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এ নিষেধাজ্ঞা শুধু নন-রেসিডেন্ট বিদেশিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তা ছাড়া মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির কারণে অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরের নাগরিকদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

বেশ কিছুদিন ধরে গৃহায়ন সংকটে ভুগছে নিউজিল্যান্ড। কম মুনাফার হার, সীমিত আবাসন ও অভিবাসনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আবাসন খাতে মূল্য বেড়েছে। বাড়ির মালিকানা পাওয়ার বিষযটি অনেকের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। বিদেশি ক্রেতারা বাড়ি কেনায় অবকাঠামো খাত ও বাড়ির দাম বাড়ছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়।

বিদেশি মালিকানা ও নিউজি ল্যান্ডের বড় বড় শহরে আবাসন সংকটের বিষয়টি গত বছরের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হয়েছিল। ওই ইস্যুকে কেন্দ্র করেই কনজারভেটিভ ন্যাশনাল পার্টির ৯ বছরের শাসনের অবসান হয়। এখন নিউজিল্যান্ডের ক্ষমতায় রয়েছে মধ্যম-বামপন্থি জোট সরকার। বুধবার (১৫ আগস্ট) আবাসন সংকট সমাধানে নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে ওভারসিজ ইনভেস্টমেন্ট অ্যামেন্ডমেন্ট নামে একটি বিল পাস করতে সক্ষম হয় তারা। ৬৩-৫৭ ভোটে বিলটি পাস হয়।

এ বিলের আওতায় বিদেশিরা এখন বেশিরভাগ ধরনের বাড়ি কেনা থেকে নিষিদ্ধ থাকবে। তবে নতুন অ্যাপার্টমেন্টে সীমিত বিনিয়োগ করতে পারবে তারা। অবশ্য, রেসিডেন্সি সুবিধাপ্রাপ্ত বিদেশিদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরের নন-রেসিডেন্ট নাগরিকরা নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। নিউজিল্যান্ডর বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নমন্ত্রী ডেভিড পার্কার পার্লামেন্টে পাস হওয়া বিলটিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ বলে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এ সরকার বিশ্বাস করে অপেক্ষাকৃত ধনী বিদেশি ক্রেতাদের দাপটের কাছে নিউ জিল্যান্ডবাসীকে হার মানতে দেওয়া যাবে না। এটি লেকের পাশের কোনো সুন্দর বাড়ি হোক, কিংবা সমুদ্রের সামনের ঘর হোক কিংবা হোক না সেটা আধুনিক সাজে সজ্জিত একটি বাড়ি, যেটাই হোক না কেন এ আইনের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হবে যে, আমাদের বাড়ির বাজার নিউজিল্যান্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, সেটা আন্তর্জাতিক বাজারে যাবে না।’ অবশ্য বিরোধীদের দাবি, এ নিষেধাজ্ঞা অপ্রয়োজনীয় এবং এর মধ্য দিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান করা যাবে না।

নিউজিল্যান্ডর গৃহায়ন খাতের সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় ক্রেতা হলো চীনা বিনিয়োগকারীরা।

সিলিকন ভ্যালির ধনকুবের পিটার থিলের মতো কতিপয় সম্পদশালীও নিউজিল্যান্ডের নাগরিক হয়েছেন এবং দেশটিতে সম্পদ ক্রয় করেছেন।

গত ১০ বছরে নিউজিল্যান্ডে আবাসনের গড় মূল্য ৬০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। আর দেশের বৃহত্তম শহর অকল্যান্ডে এ মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গৃহায়ন বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হয়। জুনের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রায় শতাংশ বাড়ির ক্রেতা নিউজিল্যান্ডর নাগরিক অথবা রেসিডেন্ট। আর তিন শতাংশেরও কম বাড়ি বিদেশিরা কিনেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close