ইয়েমেনে একটি বাসে বিমান হামলায় শিশুসহ ৪৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের এই আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছে হুতি বিদ্রোহীরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

ইয়েমেনে শিশুদের বহনকারী এক স্কুল বাসে হামলার ঘটনায় বহু বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ৪৩ জন নিহত আর ৬১ জন আহত হয়েছে। সেখানকার রেড ক্রিসেন্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, হতাহতদের বেশির ভাগই শিশু। এদের অনেকেরই বয়স ১০ বছরের নিচে। হামলাটি সৌদি-আমিরাত সামরিক জোটের বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এ ব্যাপারে এখনো ওই জোটের আনুষ্ঠানিক মন্তব্য জানা যায়নি। হুতি সুপ্রিম রেভ্যুলশনারি কমিটির প্রধান মোহাম্মদ আল আল হুথি বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বানকে স্বাগত জানাই। আমরা সবরকম সহায়তা করতে প্রস্তুত।’

তিন বছর আগে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী দখলে নেয় ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা। সৌদি রাজধানী রিয়াদে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন হাদি। আল জাজিরার খবর থেকে জানা গেছে, হুতি বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শাদা প্রদেশের দাহান শহরের এক ব্যস্ততম বাজারে ওই হামলা চালানো হয়। বাসটি বাজারে ঢুকতেই সৌদি জোটের নিশানা হয়’ আল জাজিরাকে বলেছেন সেখানকার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইয়েমেন পোস্টের সম্পাদক হাকিম মাসমারি। বৃহস্পতিবার হামলার পর এর নিন্দা জানান জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনিও গুয়েতেরেস।

তিনি এজন্য স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান বলে জানিয়েছেন তার মুখপাত্র। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিটা ফোর বলেন, ভয়াবহ এই বাস হামলায় বোঝা যায় ইয়েমেনের অবস্থা কতটা খারাপ। তিনি বলেন, প্রশ্ন হচ্ছে এখন কি সবপক্ষ নতুন করে চিন্তা করবে? শিশুদের কথা চিন্তা করে এখনই এই সংঘাত থামানো উচিত।

সৌদি আরবের দাবি, হুতিদের ওপর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনেই হামলা চালানো হয়েছে। শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে হুতিরা। হুতিদের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হাদির অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে।

২০১৫ সালের মার্চে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিত্রদের নিয়ে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি জোটের অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২২০০ শিশু রয়েছে।

"