আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৯ জুলাই, ২০১৮

ধুঁকছে জার্মানির ওল্ড কেয়ার

জার্মানিতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু সেই হারে বাড়ছে না তাদের যতœ নেয়ার সুযোগ-সুবিধা। চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল অবশ্য এই অবস্থার উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

পাডারবর্নে এক নার্সিং হোম পরিদর্শন করেছেন অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। তার সঙ্গে যারা দেখা করতে এসেছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন ৯৩ বছরের ফ্রাউ শুল্টারও। শারীরিক সমস্যার কারণে নিজে থেকে নড়াচড়ার ক্ষমতা হারিয়েছেন তিনি।

তিনি জানালেন, আমি বরং এর চেয়ে বাসায় থাকলেই ভালো করতাম। এখানকার খাবার জঘন্য। অবশ্য নার্সিং হোমের কর্মীদের নিয়ে তার কোনো অসন্তোষ নেই। বরং শত কষ্টের মধ্যেও তাদের মুখের হাসির প্রশংসাই করলেন ফ্রাউ শুল্টার।

জার্মানিতে প্রায় ৩০ লাখ বয়স্ক লোক রাষ্ট্রের সেবা নিচ্ছেন। ২০৬০ সালের মধ্যে তা পৌঁছাবে ৪৫ লাখে। বয়স্কদের সংখ্যা বাড়তে থাকা এবং তাদের সেবাদাতার পরিমাণ কমতে থাকায় দ্রুতই এক দুর্যোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে জার্মানি। বিভিন্ন সেবা ক্ষেত্রে এখন ৩৬ হাজার পদ খালি আছে, এর মধ্যে শুধু বয়স্কদের সেবাদানেই খালি ১৫ হাজার কর্মীর পদ।

সেবাদান কর্মী ফের্ডি সেবি অবশ্য এই অবস্থার পরিবর্তনে আশাবাদী। তিনি তাকিয়ে আছেন বার্লিনের দিকেই। গত বছরের সেপ্টেম্বরে মার্কেলের নির্বাচনী প্রচারণার এক বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, আমার জন্য এটা খুবই দুঃখের যে, কোনো রাজনীতিবিদই এই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী না। তিনি সেই সময় মার্কেলকে একটি ওল্ড কেয়ার হোম পরিদর্শনের আহ্বানও জানান।

তরুণ কর্মীদের এই খাতে আকৃষ্ট করাটা দিন দিন খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে হাজার হাজার বৃদ্ধাশ্রম ভুগছে কর্মী স্বল্পতায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদে জানা গেছে, এক তৃতীয়াংশ বৃদ্ধাশ্রম এখন পদ খালি হলেও আর বিজ্ঞপ্তি দেয় না। কারণ, সেসব পদের জন্য কেউ আবেদনই করেন না। গত বছর একটি পদে চাকরি দিতে গড়ে ১৭১ দিন সময় লেগেছে। জার্মানিতে শুধু ট্রেন চালক নিয়োগেই এর চেয়ে বেশি সময় লাগে।

দেশজুড়ে এই অবস্থার অবশ্য কিছুটা তারতম্য আছে। গড়ে প্রতি ১০০ পদের জন্য মাত্র ২১ জন আবেদন করেন। স্যাক্সনি রাজ্যে অবশ্য এ সংখ্যা আরো কম, মাত্র ১৫ জন।

বেতনের সঙ্গে শ্রমের সামঞ্জস্য না থাকায় তরুণরা এই খাতে আকৃষ্ট হচ্ছেন কম। জার্মান ফেডারেল স্ট্যাটিসটিক্স অফিস ডেস্টাটিস বলছে, ৩ বছরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন কর্মী প্রতি ঘণ্টায় ১৮ ইউরো আয় করেন। অন্য খাতের কর্মীরা সেখানে আয় করেন ঘণ্টায় ২২ ইউরোর মতো।

মার্কেলও বুঝতে পেরেছেন এই সমস্যা। তিনি নিজেও এই বেতন-বৈষম্যে আপত্তি জানিয়েছেন। বৃদ্ধাশ্রম পরিদর্শন শেষে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যারা সারা দিনই মানুষের সঙ্গে কাজ করছেন, ব্যাংক বা মেশিনচালকদের চেয়ে বেশি বেতন না হোক, তাদের অন্তত সমান বেতন কেন পাবেন না?

এই উদ্বেগ দূর করতে জার্মানির স্বাস্থ্য ও পরিবার এবং শ্রম মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে। প্রথম ধাক্কাতেই ১৩ হাজার খালি পদ পূর্ণ করার পরিকল্পনা তাদের। বৃদ্ধাশ্রমের কর্মীরা যাতে অন্তত ৩০০০ ইউরো মাসিক বেতন পান, সে উদ্দেশ্যেও কাজ করে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু এই বিশাল পরিমাণ অর্থের জোগান আসবে কোত্থেকে তা নিয়ে আছে প্রশ্ন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist