আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তানে নির্বাচনের আগে কেন এই সহিংসতা
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের কোয়াটার কাছে মাসতুং শহরে নির্বাচনী সমাবেশে চালানো হামলায় প্রাদেশিক নির্বাচনের একজন প্রার্থীসহ প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১৩০ জন। এতে আহত হয়েছেন আরো বহু মানুষ। শুক্রবার দিনের আরো আগের দিকে উত্তরাঞ্চলীয় বান্নু শহরে আরেকটি নির্বাচনী সমাবেশে বোমা হামলায় চারজন নিহত হয়।
আাগামী ২৫ জুলাই পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নির্বাচনের আগে আরো সহিংসতার ঘটনা ঘটবে। গত মঙ্গলবার উত্তরাঞ্চলীয় পেশোয়ার শহরে একটি নির্বাচনী সমাবেশে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২২ জন নিহত হয়। পাকিস্তানি তালেবান সবশেষ এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে।
মাসতুংয়ে শুক্রবারের হামলার যত মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, পাকিস্তানে গত এক বছরেরও বেশি সময়েও, একক কোনো হামলায় এত ব্যাপক মানুষের হতাহত হওয়ার ঘটনা আর ঘটেনি।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী সিরাজ রাইসানি। তিনি বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির একজন প্রার্থী ছিলেন। ইসলামাবাদ থেকে বিবিসির সাংবাদিক এম ইলিয়াস খান বলছেন, সবশেষ এই হামলার ঘটনাটি পাকিস্তানে একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী একদিকে যেমন দাবি করছে যে, তারা জঙ্গিদের তাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনি এ রকম একটি হামলার ব্যাপারে কাছ থেকে কোনো হুমকিও ছিল না। এর আগে, ২০১৩ সালের নির্বাচনের আগে জঙ্গিরা আগাম হুমকি দিয়েছিল। ফলে তখন কিছু কিছু রাজনৈতিক দল খুব কমই প্রচারণা চালিয়েছিল।
তিনি বলছেন, ওই দলগুলোই আবার আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। আর আক্রমণকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, এসব দল যাতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে না পারে।
ইলয়াস খান বলছেন, সবশেষ এই হামলার পর নির্বাচনের আগে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে। এসব হামলার ঘটনাই ঘটেছে দুর্নীতির দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সাজা হওয়ার পর।
শুক্রবারের সব শেষ হামলাও হয়েছে লন্ডন থেকে নওয়াজ শরিফের লাহোরে ফিরে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে। তাকে স্বাগত জানাতে গিয়ে বিক্ষোভ করলে তার বহু সমর্থককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শহরে নামার পর গ্রেফতার করা হয়েছে নওয়াজ শরিফকেও। তার আগে আবুধাবিতে নওয়াজ বিবিসিকে বলেন, আগামী নির্বাচনের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। কারণ সরকার বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে। তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে মরিয়মও। তাকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিনিও কারাদ-ে দ-িত। আদালত যখন তাদের সাজা দেন, তারা দুজনেই তখন লন্ডনে ছিলেন।
"