আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৮ জুলাই, ২০১৮

ভর্তি দুর্নীতি রুখতে অবশেষে কড়া পদক্ষেপ

কলেজে ছাত্র ভর্তি নিয়ে দুর্নীতি রুখতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে সরিয়ে দেওয়া হলো তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভানেত্রীকে। মেধা তালিকায় নাম থাকলেও কলেজে ভর্তি হতে গেলে মোটা টাকা দাবি করছিল ছাত্রনেতারা। না দিলে ধমকি থেকে হুমকি, সবই পাচ্ছিলেন ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকরা। এই অরাজকতা চলছিল কলেজের ফটকে বসে। ছাত্রছাত্রীরা যখন কলেজে আসছিলেন বাছাই তালিকা দেখতে, কাউন্সেলিংয়ের জন্য এবং ভর্তির টাকা জমা দিতে, তখনই ওইসব মাতবর ছাত্রনেতাদের খপ্পরে পড়ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই দুর্নীতির খবর পেয়ে অত্যন্ত বিরক্ত হন এবং তার নির্দেশে সক্রিয় হয় প্রশাসন।

বিভিন্ন কলেজের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কিন্তু তাতেও দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছিল না। তখন আক্ষরিক অর্থেই রাস্তায় নামেন মুখ্যমন্ত্রী। আচমকা চলে যান দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজ পরিদর্শনে। তার নির্দেশে কলকাতার পুলিশ কমিশনারও কয়েকটি কলেজ ঘুরেন। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নির্দেশ দেন, দোষী ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। যেসব কলেজে সমস্যা হচ্ছে, সেখানে দরকার হলে ছাত্র সংসদ ভেঙে দিতে। এবং চূড়ান্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে বুধবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভানেত্রী জয়া ঘোষকে পদ থেকে সরিয়ে মমতা কার্যত বার্তা দিলেন, তিনি কাউকে ছেড়ে কথা বলবেন না।

এর পাশাপাশি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। বদলানো হলো কলেজে ভর্তির একাধিক নিয়ম, যা চালু হয়ে গেল অবিলম্বে। ভর্তি দুর্নীতি নিয়ে ডয়চে ভেলের প্রথম রিপোর্টে সাবেক ছাত্রনেতা রঞ্জিৎ সাহা সমস্যা থেকে মুক্তির ঠিক যে যে উপায় বলেছিলেন, সরকারি সিদ্ধান্তে কার্যত সেই ভাবনারই প্রতিফলন দেখা গেল।

আগেই চালু হয়েছিল অনলাইনে ভর্তির আবেদন। এবার বাছাই তালিকা প্রকাশও কলেজের ওয়েবসাইটেই হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

সেই সঙ্গে বাতিল করা হলো কলেজে হাজির হয়ে কাউন্সেলিং এবং নথি যাচাইয়ের পদ্ধতিও। নতুন ব্যবস্থায়, মেধা তালিকার ভিত্তিতেই সরাসরি ভর্তি করে নেওয়া হবে। কাউন্সেলিং এবং নথি যাচাই হবে ক্লাস চালু হয়ে যাওয়ার পরে। কলেজে এসে টাকা জমা দেওয়ার ব্যবস্থাও বাতিল হলো। এবার থেকে টাকা জমা দেওয়া যাবে ব্যাংকের মাধ্যমে। এজন্য কলেজগুলো তাদের ব্যাংকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠাতে বলা হয়েছে।

সাবেক ছাত্রনেতা রঞ্জিৎ সাহা নিজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য-সমর্থক হয়েও আগের দিন কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচন তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার ফলে কলেজে কোনো বিরোধী পক্ষ থাকছে না। এর সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ছাত্র নেতা, যারা শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত, তারা যথেচ্ছাচার করছে। আরেক সাবেক ছাত্রনেতা, পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যও ডয়চে ভেলেকে একই কথা বললেন। তার মন্তব্য, কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জির নির্বুদ্ধিতাই শুধু নয়, অজ্ঞতাও বটে। এ কারণে কলেজে যে শৃঙ্খলা ছাত্রছাত্রীরাই বজায় রাখতে পারে, সেটা আজ আর সম্ভব হচ্ছে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist