আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সিরিয়ায় বিমান হামলায় বন্ধ হাসপাতাল
দক্ষিণ-পশ্চিম সিরিয়ার বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকায় সরকার সমর্থিত বাহিনীর বিমান হামলায় তিনটি হাসপাতালে সেবা দান কাজ বন্ধ হয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একটি দাতব্য চিকিৎসা সেবাদানকারী সংস্থা ও একটি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা জানিয়েছে, ডেরা শহরের পূর্বে সাইদা, জিযাহ ও মুসাইফিরা অঞ্চলে রাতে বিমান হামলা চালানো হয়। ইসরায়েল অধ্যুষিত গোলান মালভূমি এলাকা ও জর্ডানের সীমান্ত এলাকায় আক্রমণগুলো চালানো হয়। গত এক সপ্তাহের যুদ্ধে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ এলাকাচ্যুত হয়েছে। ডেরা ও কুইনটেরা প্রদেশ গত এক বছর ধরে অপেক্ষাকৃত সংঘর্ষমুক্ত ছিল। জর্ডানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমান্বয়ে সংঘাত কমিয়ে আনার চুক্তির কারণে এত দিন ওই অঞ্চল অপেক্ষাকৃত শান্ত ছিল। সিরিয়া সরকারের অন্যতম প্রধান মিত্র রাশিয়াকে সমর্থন দেয় জর্ডান। তবে এপ্রিলে পূর্ব ঘৌতার বিদ্রোহীদের পরাজিত করার পর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ওই অঞ্চলেরও দখল নিতে মনস্থির করেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার মধ্য রাতে বিমান হামলার পর সাইদা শহরের হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
পর্যবেক্ষণ সংস্থাটি জানায়, মুসাইফিরার হাসপাতালে আঘাত করে রুশ যুদ্ধবিমান। হাসপাতালটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। পরে জিযাহর হাসপাতালও রুশ যুদ্ধবিমানের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর আগে হাসপাতালে আক্রমণ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিরিয়ান ও রুশ সেনাবাহিনী। তবে জাতিসংঘের যুদ্ধাপরাধ তদন্তকারীরা তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় সুরক্ষিত হাসপাতালগুলোতে কৌশলগতভাবে আক্রমণ করার অভিযোগ এনেছেন। পূর্ব ঘৌতায় সম্প্রতি সেবার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ওপরও ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ করার অভিযোগ আনা হয়। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, মঙ্গলবার সরকার সমর্থিত বাহিনীর হামলায় অন্তত ১৪ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ১৭ জুন অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে মোট ৪৬ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হলেন। অন্তত ৩৯ জন বিদ্রোহী ও সরকার সমর্থিত বাহিনীর ৩৬ জন সেনাসদস্যও মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জাতিসংঘ বলেছে, ডেরায় বিমান হামলা ও গোলাগুলি শুরু হওয়ার পর ৪৫ থেকে ৫০ হাজার মানুষ তাদের ঘর ছেড়ে জর্ডান ও গোলান হাইটসের দিকে পালিয়ে গেছে। জাতিসংঘের ভাষ্য অনুযায়ী, আশ্রয়হীন মানুষের অতিসত্তর মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। সীমান্ত অঞ্চলে কিছুদিনের মধ্যেই সঙ্কট শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কারণ জর্ডান এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে তারা আর কোনো শরণার্থীকে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেবে না।
২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে জর্ডানে প্রায় ১৩ লাখ সিরিয়ান শরণার্থী প্রবেশ করেছে।
"