আন্তর্জাতিক ডেস্ক
‘ব্যাপক মাত্রায়’ পরমাণু কর্মসূচির হুমকি ইরানের
ইরান হুমকি দিয়ে বলেছে, পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের পর তারা এখন নতুন করে ‘ব্যাপক মাত্রায়’ পরমাণু কর্মসূচি শুরু করতে প্রস্তুত। শুক্রবার প্রকাশিত এক বিববৃতিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেছেন, পরমাণু চুক্তিটি বাঁচাতে ইরান আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় শামিল হবে। তবে একই সঙ্গে তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি ফের শুরুর প্রস্তুতিও চালাবে।
ট্রাম্প মঙ্গলবার ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি পরিহারের সিদ্ধান্ত জানানোর পর ইরানিরা এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে। হাজার হাজার ইরানির বিশাল এ বিক্ষোভের মধ্যে জারিফ এ মন্তব্য করলেন।
তেহরানে শুক্রবারের জুমার নামাজের পর বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা পুড়িয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী স্লোগান দিয়ে মিছিল করেছে।
বিবৃতিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারিফ অজ্ঞতা এবং বোকামির জন্য ট্রাম্পকে দোষারোপ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি মধ্যপ্রাচ্যকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, ইরান চুক্তিটিতে সই করা অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে চুক্তি বাঁচানোর চেষ্টা করবে। মঙ্গলবারই ব্রাসেলসে জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন জারিফ। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল বলেছেন, চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ায় মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এত বড় একটি অর্থনৈতিক শক্তির দেশ সরে যাওয়ায় এখন চুক্তিটি বাঁচানোই কঠিন হয়ে পড়বে।
জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তে তেহরানের পরমাণু কর্মসূচির লাগাম টানতে ২০১৫ সালে নিরাপত্তা পরিষদের ৫ স্থায়ী সদস্য ও জার্মানির সঙ্গে দশ বছর মেয়াদি এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল ইরান।
চুক্তি অনুযায়ী, গত তিন বছর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ব্যবহৃত সেন্ট্রিফিউজের সংখ্যা কমিয়ে আনার পাশাপাশি তেহরান তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো নিয়মিত পরিদর্শনের জন্য আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও পরিদর্শকদেরও নিয়মিত অনুমতি দিয়ে এসেছে। বারাক ওবামা আমলে স্বাক্ষর হওয়া এ চুক্তি নিয়ে প্রথম থেকেই সমালোচনা মুখর ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার এক ঘোষণায় তিনি চুক্তিটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে আসা এবং ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত জানান। তবে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলো বলছে, তারা এখনো চুক্তির ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
"