আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরানের সঙ্গে চুক্তি ছিন্ন নয়
ট্রাম্পকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে না আসার আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেছেন, এরকম সন্ধিক্ষণে ইরানের সঙ্গে চুক্তি ছিন্ন করা ভুল সিদ্ধান্ত হবে। আন্তর্জাতিক এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে না সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে ট্রাম্পকে রাজি করানোর প্রচেষ্টায় রোববার ওয়াশিংটনে সফর করেছেন জনসন। বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, ইরানের সঙ্গে চুক্তি থেকে বের হয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। এ নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলছে হুমকি ও পাল্টা হুমকি আদান-প্রদান। তবে ট্রাম্প চুক্তি থেকে বের হয়ে আসতে চাইলেও চুক্তির ইউরোপীয় সদস্যরা চুক্তি টিকিয়ে রাখার পক্ষেই জোর দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন ট্রাম্পকে চুক্তিতে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য ও তাদের ইউরোপীয় মিত্রদের কাছে ১২ তারিখ পর্যন্ত সময় আছে ট্রাম্পের মনোভাব পরিবর্তনের। ট্রাম্প ইরান চুক্তির একজন কট্টর সমালোচক। তিনি চুক্তিটিকে পাগলাটে বলে আখ্যায়িত করেছেন। ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ চুক্তিটিতে স্বাক্ষরকারী অন্যান্য দেশ হচ্ছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বরিস জনসন লিখেছেন, ইরানের ওপর থেকে পারমাণবিক সীমাবদ্ধতা উঠিয়ে নিলে কেবল ইরানেরই লাভ হবে। ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার জন্য আমাদের কাছে যত পথ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে সুবিধাজনক হচ্ছে এই চুক্তিটি। অবশ্যই এর দুর্বলতাও আছে, কিন্তু আমি নিশ্চিত সেগুলো ঠিক করা যাবে। জনসন বলেন, চুক্তিটির কারণে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ রয়েছে। আর এখন যেহেতু ‘হাতকড়াগুলো’ সঠিক জায়গামতো আছে, আমি এগুলো ফেলে দেওয়ায় কোনো লাভ দেখছি না। তিনি আরো বলেন, আমাদের জন্য বিচক্ষণ পদক্ষেপ হবে এই হাতকড়াগুলোর অবস্থা আরো উন্নত করা। ওয়াশিংটনে অবস্থানকালীন সময়ে জনসন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন ও কংগ্রেসের পররাষ্ট্র নীতিমালাবিষয়ক নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না।
ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি কি বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র : ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে এলে যুক্তরাষ্ট্রকে এমন অনুশোচনা করতে হবে যা ইতিহাসে কখনো ঘটেনি, বলেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। ১২ মের মধ্যে ইরানের সঙ্গে করা চুক্তির কিছু ত্রুটি সংশোধন না করা হলে তা থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান যাতে পরিবর্তন না হয় সেজন্যে চেষ্টা করছে ব্রিটেনসহ ইউরোপের কিছু মিত্র দেশ। তবে বরাবরের মতো ইরানের তীব্র বিরোধিতায় ইসরায়েল। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে চুক্তিটি হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ছিল চীন, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেন।
আর এই পরমাণু অস্ত্র না বানানোর এই চুক্তির ফলেই তুলে নেয়া হয়েছিল ইরানের বিরুদ্ধে অবরোধ। কিন্তু ক্ষমতার আসার পর থেকেই বহুবার এর বিরোধিতা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি এ সম্পর্কে তার বক্তব্য, এই পরমাণু চুক্তিতে কিছু ভয়াবহ ত্রুটি রয়েছে।
"