আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্স চার্লসকে কমনওয়েলথের নেতা করার আহবান রানির
ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ লন্ডনে কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। আগামী শনিবার রানি তার ৯২তম জন্মদিন পালন করবেন এবং ইতোমধ্যেই কিছু কিছু দায়িত্ব তিনি রাজপরিবারের কনিষ্ঠ সদস্যদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। ৫৩টি দেশের এই জোটের সম্মেলনে তিনি এই শেষবারের মত যোগ দিচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তার ভাষণে রানি এলিজাবেথ বলেন, কমনওয়েলথ যেভাবে বিকশিত হয়েছে তাতে তিনি সন্তুষ্ট এবং গর্ব অনুভব করেন।
তিনি আশা করেন, তার বড় ছেলে প্রিন্স চার্লস তারপর এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, যার মধ্য দিয়ে কমনওয়েলথের স্থিতিশীলতা এবং ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। প্রিন্স চার্লসকে এই জোটের নেতা নির্বাচিত করার জন্যে তিনি কমনওয়েলথ নেতাদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আন্তরিকভাবেই তিনি চান’ যে তার ছেলে একদিন এই দায়িত্ব পালন করবেন।
কমনওয়েলথ প্রধানের নেতৃত্বের পদটি বংশানুক্রমিক নয় এবং তার মৃত্যুর পর প্রিন্স অফ ওয়েলস আপনা আপনি এই পদে আসীন হবেন না। সম্মেলনে ৫৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ৪৬টি দেশের সরকার প্রধান উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। ব্রিটেনের রানি বলেন, ‘আপনাদের জন্যে দায়িত্ব পালন করা আনন্দের ও সম্মানের বিষয়। অত্যন্ত গর্ব ও সন্তুষ্টির সঙ্গে আমি এই জোটের দায়িত্ব পালন করেছি।’ দুই দিনের এই সম্মেলনে যেসব বিষয়ে আলোচনা হবে তার মধ্যে রয়েছে দূষণের হাত থেকে সমুদ্রকে রক্ষা করা, সাইবার নিরাপত্তা এবং জোটের বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে বলেছেন, এই সম্মেলনে একবিংশ শতাব্দীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা হবে। ‘অনেক অসুবিধা আছে, সাফল্য আছে, বিতর্ক আছে, কিন্তু আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যে এই কমনওয়েলথ অনেক ভালো কিছু করতে পারবে’-বলেন তেরেসা মে। এর আগে প্রিন্স চার্লস বলেন, আধুনিক কমনওয়েলথের বড় রকমের ভূমিকা পালনের অবকাশ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি এই সম্মেলন আমাদের মধ্যে সম্পর্ককেই শুধু জোরালো করবে না বরং এর ফলে এর প্রত্যেকটি দেশের সকল নাগরিকের কাছে এর প্রাসঙ্গিকতা তৈরি হবে।’
কিছু তথ্য : এই কমনওয়েলথ প্রায় ২৪০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতি দুই বছর পর পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই জোটের পাঁচটি সদস্য দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, তাদের পরিবারের সদস্য, লবিস্ট এবং সাংবাদিকরা এতে অংশগ্রহণ করেন। এ বছর এটি লন্ডনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কিন্তু এর আগের বৈঠকটি হয়েছিল মাল্টায়, ২০১৫ সালে। সবশেষ এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ২০১৭ সালে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ ভানুয়াতুতে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে সেটি বাতিল করা হয়েছিল। দুই দিনের বৈঠক শেষে এক ঘোষণায় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নেতারা তাদের সম্মতি প্রকাশ করেন।
"