আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কিউবায় রহস্যময় অসুস্থতা
দূতাবাস কর্মীদের নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় আমেরিকা ও কানাডা
রহস্যজনক সব অসুস্থতা! যার পেছনে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কোনো কারণ।
কেউ হঠাৎ করে কানে কিছুই শুনতে পাচ্ছেন না। কেউবা রাতে ঘুমোতে পারছেন না এক ফোঁটাও। কেউ আবার আচমকাই অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। কারো কারো কানের ভেতর বিভিন্ন সুপারসনিক শব্দ। অনেকে মনোসংযোগ করতে পারছেন না। কারো আবার স্মৃতিশক্তিটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। মনে করতে পারছেন না সাধারণ শব্দ। কারো সারাক্ষণ বমি পাচ্ছে। কারো প্রচ- মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব।
আশ্চর্য হওয়ার আরো কারণ রয়েছে। যারা এসব ভয়ানক সমস্যায় ভুগছেন, তারা প্রত্যেকেই পেশাগতভাবে কূটনীতিবিদ। তাদের বেশির ভাগই হয় আমেরিকা, নয়তো কানাডার নাগরিক। এবং প্রত্যেকেই কর্মসূত্রে কিউবার দূতাবাসে কাজ করেন। গত দুই বছরে এমন রহস্যজনক অসুস্থতার শিকার হয়েছেন ২৪ জন মার্কিন এবং ১০ জন কানাডীয় কূটনীতিবিদ। কিন্তু কী কারণে এমনটা হয়েছে বা হচ্ছে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বুঝে উঠতে পারেননি চিকিৎসকেরা।
সংবাদ সংস্থা এপির খবর অনুযায়ী, ওই কূটনীতিকদের কয়েকজন চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, তারা একটা যন্ত্রণাদায়ক শব্দ অল্প সময়ের জন্য শুনেছেন এবং তার পর থেকে কোনো কানেই আর কিছু শুনতে পাচ্ছেন না। তারা রাতে ঘুমোনোর সময় ওই শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। তাতেই ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু একই সময়ে ওই ঘরে, এমনকি একই বিছানায় শুয়ে থাকা অন্যজন সেই শব্দ শুনতে পাননি।
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘পেরেলম্যান স্কুল অব মেডিসিন’-এর ‘সেন্টার ফর ব্রেন ইনজুরি অ্যান্ড রিপেয়ার’ বিভাগের প্রধান ডগলাস স্মিথ ওই ২৪ জন মার্কিন কূটনীতিকের চিকিৎসা করেন। ওই রোগীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘মাথায় খুব জোর আঘাত লাগলে যে ধরনের রোগী আমাদের ক্লিনিকে আসেন, ওদের দেখে তেমনটাই মনে হয়েছিল। কিন্তু ওরা কেউই মাথায় আঘাত লাগার কথা বলেননি।’ স্মিথের সহযোগীরা ওই কূটনীতিকদের মস্তিষ্কের একটা অংশে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন। যে শ্বেতবস্তু মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে সেখানেই পরিবর্তনটা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা মনে করছিলেন, কোনো তীব্র শব্দের (সনিক) আক্রমণের শিকার ওই কূটনীতিকরা। কিন্তু, তার সামান্যই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু, বিজ্ঞানীদের দাবি, মস্তিষ্কের ওই পরিবর্তন করার ক্ষমতাকোনও শব্দ তরঙ্গেরই নেই। তদন্তকারীদের একাংশের মতে, এটা গণহিস্টিরিয়াও হতে পারে। কিন্তু চিকিৎসকেরা সেই মতো উড়িয়ে দিচ্ছেন।
"