আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আসিফার বিচারিক কার্যক্রম অন্য রাজ্যে স্থানান্তরের আবেদন
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের কাঠুয়া শহরের রাসানা এলাকা থেকে আট বছরের শিশু আসিফা বোনো অপহরণের পর ধর্ষণ এবং হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম জম্মু থেকে চ-িগড়ের আদালতে স্থানান্তরের আবেদন জানিয়েছেন শিশুটির বাবা। সোমবার (১৬ এপ্রিল) পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টে এ আবেদন জানান।
গতকাল দুপুরে কাঠুয়ার দায়রা জজ আদালতে আসিফাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বিচার শুরু হওয়ার কথা। আসিফার পরিবারের পক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, জম্মু-কাশ্মীরে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম নিয়ে তারা নিরাপত্তাজনিত শঙ্কায় আছেন। জম্মুর পরিস্থিতি, কাঠুয়ার আইনজীবীদের বিরোধিতা এবং চার্জশিট দায়ের করতে বাধা দেওয়ায় আমরা শঙ্কিত যে বিচারিক কার্যক্রম এখানে শান্তিপূর্ণ হবে না।
তারা এ মামলা অন্য রাজ্যের আদালতে স্থানান্তরের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান।
গত ১০ জানুয়ারি রাসানা এলাকা থেকে আসিফাকে অপহরণের পর সপ্তাহখানেক আটকে রেখে ধর্ষণ এবং শেষে হত্যা করা হয়। ১৭ জানুয়ারি রাসানার একটি জঙ্গলে তার মরদেহ পাওয়া যায়। সম্প্রতি ওই ধর্ষণ ও হত্যাকা-ে জড়িতদের বিরুদ্ধে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পর বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।
এ ঘটনায় একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, চার পুলিশ কর্মকর্তা ও এক কিশোরসহ মোট আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেনÑ অবসরপ্রাপ্ত রাজস্ব কর্মকর্তা সনজি রাম, পুলিশের বিশেষ কর্মকর্তা দীপক খাজুরিয়া, সুরেন্দ্র বর্মা, আনন্দ দত্ত ও তিলক রাজ, সনজি রামের ভাগনে (ছদ্মনাম রামু, অভিযোগপত্রে বয়স ১৯ বছর বলা হলেও সংবাদমাধ্যম ১৫ বছর দাবি করে নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না), তার বন্ধু পারবেশ কুমার (মানু) ও রামের ছেলে বিশাল জঙ্গোত্রা।
পুরো লোমহর্ষক ঘটনার বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, আসিফা বোনো সংখ্যালঘু বাকারওয়াল জাতিগোষ্ঠীর ইউসুফ বাকারওয়ালের মেয়ে। গোষ্ঠীটি কাশ্মীরের পাহাড়ি এলাকায় যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ায়। ভেড়া চড়ানো এদের জীবিকা-নির্বাহের উপায়। এই গোষ্ঠীর কিছু লোক রাসানা এলাকায় বসবাস করতে এলে এখানকার প্রভাবশালী সনজি রাম তাদের তাড়াতে উঠে-পড়ে লাগেন। বাকারওয়ালদের বিরুদ্ধে মাদকপাচার, গো-হত্যাসহ বিভিন্ন উসকানি ছড়ালেও পেরে উঠছিলেন না উগ্র মানসিকতার সনজি রাম। শেষমেষ তিনি তার ভাগনের মাধ্যমে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের পথ বেছে নেন।
"