আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে আবারও পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ নিহত
পুলিশের গুলিতে আবারও নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ হত্যায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার রাজধানী সাক্রামেন্টো। গত রোববার রাতে পুলিশ স্টেফোন ক্লার্ককে (২২) তার বাড়ির আঙিনাতেই হত্যা করে বলে জানায় বিবিসি। ক্লার্ককে অন্তত ২০ বার গুলি করা হয়েছে। পুলিশের ‘বডি ক্যামেরায়’ পুরো ঘটনা ভিডিও হয়। বুধবার রাতে পুলিশ ওই ভিডিও প্রকাশ করলে ইন্টারনেটে তা ভাইরাল হয়ে যায় এবং পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা নিয়ে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের নেতৃত্বে দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী প্রথমে সাক্রামেন্টোর সিটি হলে জড়ো হয়।
এরপর তারা ইন্টারস্টেট ফাইভ হাইওয়ে ধরে মিছিল করে। যে কারণে সড়কে যান চলাচল বিঘিœত হয়। তবে পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়নি বলে জানায় বিবিসি। মিছিলটি কয়েক ঘণ্টা ধরে নগরীর আরও কয়েকটি এলাকা প্রদক্ষিণ করে। এ সময় তারা ‘এটা একটি ফোন, বন্দুক নয়’ বলে স্লোগান দেয়। এরপর বিক্ষোভকারী দলটি একটি বাস্কেটবল স্টেডিয়ামের সামনে অবস্থান নেয়। তারা পুলিশ প্রধানকে তাদের সামনে আসার দাবি জানায়।
বিক্ষোভকারীদের মাঠে প্রবেশে বাধা দিতে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ ফটক আটকে দিলে টিকিট থাকার পরও অনেক দর্শক ওইদিন বাস্কেটবলের একটি ম্যাচ দেখতে পারেনি।
ম্যাচ শুরু হতেও দেরি হয় এবং ১৭ হাজার টিকিট বিক্রি হলেও এদিন মাত্র দুই হাজার দর্শক মাঠে ঢুকতে পেরেছিলেন। মাঠে ঢুকতে না পারা একজন ৭০ বছরের ফ্রাঙ্ক অ্যান্ডারসেন। তিনি বলেন, ‘আমার জন্য এটা এক রাতের বিনোদন হারানো। কিন্তু এই পরিবার সারা জীবনের মত তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে।’ সাক্রামেন্টো পুলিশ জানায়, একটি আবাসিক এলাকায় কেউ একজন গাড়ির কাঁচ ভাঙ্গার চেষ্টা করছে এমন খবরের পর পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। হেলিকপ্টার থেকে এক ব্যক্তিকে একটি বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে বেরিয়ে এসে বেড়া টপকে পাশের আরেকটি বাড়ির আঙিনায় ঢুকতে দেখা যায়। পুলিশের বডি ক্যামেরায় অন্ধকারের মধ্যে দুই পুলিশকে ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে ক্লার্ককে অনুসরণ করতে দেখা যায়। ভিডিওতে পুলিশকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, আমাকে তোমার হাত দেখাও। ‘বন্দুক! বন্দুক।’তারপরই গুলির শব্দ। পুলিশের দাবি, ক্লার্ক তার হাত প্রসারিত করে সামনে এগিয়ে আসছিল। তার হাতে কিছু একটা ধরা ছিল।
যেটাকে পুলিশ বন্দুক ভেবে ভুল করেছে। দুই পুলিশ ১০টি করে মোট ২০টি গুলি চালায়। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানায় সাক্রামেন্টো পুলিশ।
স্থানীয় একটি পত্রিকা জানায়, যে বাড়ির পেছনে এ ঘটনা ঘটেছে সেটা ক্লার্কের দাদার বাড়ি এবং সে সেখানেই বসবাস করতো। এ ঘটনায় তিনি নিজেও ‘আতঙ্কিত’ বলে জানান সাক্রামেন্টোর মেয়র ড্যারেল স্টেইনবার্গ।
তিনি বলেন, ‘অন্য যেকোনো সহানুভূতিশীল মানুষের মত আমিও সাক্রামেন্টোর ওই তরুণের মৃত্যুতে আতঙ্কিত। তার ছোট্ট দুইটি সন্তান আছে। এ ঘটনায় আমি কি প্রতিক্রিয়া দেখাব? এটা আতঙ্কজনক।’ ২০১৪ সাল থেকেই পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে।
"