আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৬ মার্চ, ২০১৮

কূটনীতিক বহিষ্কার

যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে রাশিয়া

যুক্তরাজ্য থেকে ২৩ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণাকে রাশিয়া অন্যায় পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে। রাশিয়ার ভাষায়, এই পদক্ষেপ ‘অদূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও হঠকারিতামূলক’।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে রুশ কূটনীতিক বহিষ্কারের এই ঘোষণাটি দেবার পর লন্ডনে রুশ দূতাবাস উপরোক্ত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। এ বিষয়ে রুশ দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানায়, এই বৈরী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাশিয়া-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের যে ক্ষতি করা হলো তার জন্য লন্ডনকেই দায় বহন করতে হবে।

উল্লেখ্য, বেঁধে দেওয়া ২৪ ঘণ্টা সময়সীমার মধ্যে রুশ ডাবল এজেন্ট সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়ার ওপর বিষাক্ত নার্ভ গ্যাস হামলার বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কাছে ব্যাখ্যা না পাওয়ায় এই কঠোর ব্যবস্থা নিল টেরেসা মের সরকার। ঠা-া যুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি কূটনীতিক বহিষ্কারের মধ্যেই শাস্তিমূলক এই পদক্ষেপটি সীমিত নয়। বরং এটি এক সিরিজ শাস্তিমূলক ব্যবস্থারই অংশ। টেরেসা মে বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ২৩ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণাটি দেওয়ার সময় বলেন, কূটনীতিক বহিষ্কারের বাইরেও চলতি বছর অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপে রাশিয়ায় সরকারি প্রতিনিধি পাঠানো থেকেও বিরত থাকবে তার সরকার।

রাশিয়ার সঙ্গে উত্তেজনায় যুক্তরাজ্যের পাশে যুক্তরাষ্ট্র : কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছে লন্ডন ও মস্কো। রাশিয়ার ২৩ কূটনীতিককে যুক্তরাজ্য বহিষ্কার করায় এ দ্বন্দ্ব উত্তেজনায় রূপ নিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ‘ঘনিষ্ঠ মিত্র’ হিসেবে তাদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রুশ ডাবল এজেন্ট সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়ার ওপর বিষাক্ত নার্ভ গ্যাস হামলার প্রতিবাদে ওই ২৩ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে যুক্তরাজ্য। তার আগে যুক্তরাজ্যে থাকা স্ক্রিপাল ও ইউলিয়ার ওপর হামলার বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যাখ্যা না আসায় বুধবার রুশ ওই কূটনীতিকদের বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় টেরেসা মের সরকার।

এর কয়েক ঘণ্টা পর ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রশাসনের অবস্থানের কথা জানিয়ে বলেন, এ ধরনের জঘন্য হামলা যেন আর না ঘটে তা নিশ্চিত দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাজ্য থেকে রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কার করার বিষয়ে বিবৃতিতে ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ‘এটা ছিল কেবল জবাব’।

রুশ ডাবল এজেন্টের ওপর হামলায় মস্কোকে অভিযুক্ত করে হোয়াইট হাউসের এ মুখপাত্র বলেন, ‘রাশিয়ার সবশেষ আচরণটি আন্তর্জাতিক আইনকানুনকে উপেক্ষা, বিশ্বের দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে খাটো করা এবং পশ্চিমা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়াকে ধ্বংসের অপচেষ্টার শামিল।’

টেরেসা মে পার্লামেন্টে ২৩ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণাটি দেওয়ার সময় বলেন, কূটনীতিক বহিষ্কারের বাইরেও চলতি বছর অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপে রাশিয়ায় সরকারি প্রতিনিধি পাঠানো থেকেও বিরত থাকবে তার সরকার। তবে কূটনীতিক বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, এই পদক্ষেপ ‘অদূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও হঠকারিতামূলক’। এই বৈরী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাশিয়া-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের যে ক্ষতি করা হলো তার জন্য লন্ডনকেই দায় বহন করতে হবে।

এবার ব্রিটিশ কূটনীতিকদেরও বহিষ্কার করতে যাচ্ছে রাশিয়া : সাবেক রুশ গোয়েন্দা ও তার মেয়েকে রাসায়নিক প্রয়োগে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাশিয়ার কাছ থেকে কোনো জবাব না পেয়ে সে দেশের ২৩ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ব্রিটেন। এর পাল্টা জবাব হিসেবে এবার সকল ব্রিটিশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করতে যাচ্ছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্রিটিশ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হবেই।’ এর আগে, সাবেক রুশ গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল এবং তার মেয়েকে বিষাক্ত নার্ভ গ্যাস প্রয়োগে হত্যার চেষ্টার বিষয়টি অস্বীকার করে রাশিয়া। এর পরেই ২৩ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘ব্রিটেন ত্যাগ করতে তাদের মাত্র এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় এসব রুশ কূটনৈতিককে অবৈধ গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচনা করবে ব্রিটেন।’ এ সময় রাশিয়া সফর করতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণকে তিনি উপহাস করেন।’ এ বছরের শেষে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপে ব্রিটেনের রাজ পরিবারের কেউ যাবেন না বলেও হুশিয়ারি দেন তিনি। উল্লেখ্য, গত ৩০ বছরে একসঙ্গে এতসংখ্যক কূটনীতিককে একযোগে বহিষ্কারের ঘটনা এটাই প্রথম। এ বিষয়ে ব্রিটেনে অবস্থিত রুশ হাইকমিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এ ঘটনায় একতরফাভাবে ২৩ জন রুশ কূটনৈতিককে বহিষ্কার করা হচ্ছে ব্রিটেনের অগ্রহণযোগ্য, অনৈতিক ও অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত। তাছাড়া অধিকাংশ পর্যবেক্ষকই মনে করছেন, পুতিন এই হুমকিকে কোনো পাত্তাই দেবেন না। ইতোমধ্যেই রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘রাজনৈতিক সার্কাস’ বলে পরিহাস করেছেন। বিবিসি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist