আন্তর্জাতিক ডেস্ক
স্টিফেন হকিংয়ের ১২ প্রবচন
স্টিফেন হকিং। আইনস্টাইনের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে আলোচিত বিশ্বখ্যাত এই কালজয়ী বিজ্ঞান-প্রতিভার কীর্তিমান জীবনের অবসান হলো গতকাল বুধবার, ৭৬ বছর বয়সে। পদার্থবিজ্ঞানের মতো অতি কঠিন রস-কষহীন বিষয়েও তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছিলেন। তাত্ত্বিক জ্যোতি-পদার্থবিজ্ঞানী হকিং কৃষ্ণবিবর ও আপেক্ষিকতাবাদ নিয়ে তার অসামান্য ও বৈপ্লবিক পর্যবেক্ষণ ও কাজের জন্য বিজ্ঞানের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি বেশকিছু বিজ্ঞান-গ্রন্থেরও প্রণেতা। এসবের মধ্যে আছে তার অতি জনপ্রিয় বেস্টসেলার ‘সময়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ (এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম)। মহাকাশ, কৃষ্ণবিবর, ঈশ্বর, ভিনগ্রহেগর প্রাণী, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং এ থেকে মানুষের জন্য অপেক্ষমান বিপদ, মহাবিশ্বের সৃষ্টি, বিগ ব্যাং বা আদিতম মহাবিস্ফোরণÑএ রকম নানা বিষয়ে তিনি তার কৌতূহলোদ্দীপক মন্তব্য দিয়েছেন নানা সময়। তার মন্তব্য একই সঙ্গে ভাবিয়েছে আমজনতা থেকে বিজ্ঞানী সবাইকে। একই সঙ্গে দার্শনিকতাও ফুটে উঠেছে তার বক্তব্যে ও মন্তব্যে। খুবই বুদ্ধিদীপ্ত আর চিন্তাশীল এসব মন্তব্য কালের সেরা প্রবচনের মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য।
নিচে স্টিফেন হকিংয়ের করা ১২টি ‘প্রবচন’ তুলে ধরা হলো বাংলা অনুবাদে :
১. জীবনে কৌতুক না থাকলে জীবন হয়ে উঠত বেদনাজর্জর, ২. মানুষের মহোত্তম অর্জনগুলো এসেছে কথা বলার মধ্য দিয়ে, আর সবচেয়ে বড় ব্যর্থতাগুলো কথা না বলার কারণে।
৩. বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। ৪. জ্ঞানের সবচে বড় শত্রু অজ্ঞানতা নয়, বরং জ্ঞানের বিভ্রম।
৫. যেসব লোক নিজেদের আইকিউ নিয়ে বড়াই করে, ক্ষতিগ্রস্ত তারাই। ৬. আমার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে যদি আমি রাগ করি তবে তা হবে আমার সময়ের অপচয়মাত্র। জীবনের সঙ্গে সবাইকে মানিয়ে নিতে হয়। আমি সেটা খারাপ করিনি। ৭. তুমি যদি সব সময় রেগে থাকো আর অভিযোগ জানাতে থাকো, তাহলে লোকে তোমাকে আর সময় দেবে না। ৮. ঈশ্বর শুধু জুয়া খেলেনই না, বরং ঘুঁটিটাকে কখনো এমন জায়গায় ছুড়ে ফেলে দেন যে, এটিকে আর খুঁজে পাওয়াই যায় না। ৯. চাইলে নিজের জীবনটাকে শেষ করে দেওয়ার অধিকার যেন ভুক্তভোগীর থাকে। তবে আমার মনে হয় তা হবে বড় এক ভুল। জীবন যত খারাপ মনে হোক, জীবনে করার মতো, সফলতা লাভের মতো কিছু একটা থাকেই। যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। ১০. সবকিছু আগে করতে চাইÑএমন কত কাজ যে আমার আছে! ভেঙে যাওয়া বিকল হয়ে যাওয়া কম্পিউটারের জন্য তো কোনো পরকাল নেই। যারা অন্ধকারকে ভয় পায় এই রূপকথা শুধু তাদেরই জন্য। ১১. অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনার মধ্যেই ৪৯টি বছর ধরে বেঁচে আছি আমি। মৃত্যুকে আমি ভয় পাই না, তবে মরে যাওয়ার জন্য কোনো তাড়া আমার নেই। ১২. এই মহাবিশ্ব ততটা মহাবিশ্ব হয়ে উঠত না, যদি তাতে ভালোবাসার মানুষ না থাকত।
"