আন্তর্জাতিক ডেস্ক
‘সেক্স ট্যুরিজমের’ বিরোধিতা
চলতি বছর রেকর্ডসংখ্যক পর্যটককে স্বাগত জানানোর আশায় থাকলেও তারা যেকোনো ধরনের ‘যৌন পর্যটনের’ বিরোধী বলে জানিয়েছে থাইল্যান্ডের পর্যটন কর্তৃপক্ষ। বুধবার এক বিবৃতিতে তারা এ কথা জানায় বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। সমুদ্রসৈকত, বৌদ্ধ মন্দির ও বিশ্বখ্যাত রন্ধনপ্রণালির জন্য পরিচিত থাইল্যান্ড সারা দুনিয়ার পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় ওপরের দিকেই থাকে। এ বছরও প্রায় চার কোটি পর্যটক দেশটিতে ঘুরতে যাবেন বলে আশা করছে থাই পর্যটন কর্তৃপক্ষ। যৌনতার জন্য পরিচিতি থাকলেও থাইল্যান্ডে পতিতাবৃত্তি অবৈধ। যদিও দেশটির বড় বড় শহরে থাই ও বিদেশিদের পরিচালিত অসংখ্য যৌনপল্লী আছে, সরকারও আয়ের কথা বিবেচনা করে সেগুলোকে প্রশ্রয় দেয় বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।
‘থাইল্যান্ডকে গুণগত মানসম্পন্ন গন্তব্যের পথে এগিয়ে নিতে বিপণননীতি ও কৌশল নিয়েছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ, একই সঙ্গে যেকোনো ধরনের যৌনতানির্ভর পর্যটনের দৃঢ় বিরোধিতাও করছে’, বুধবার সন্ধ্যায় দেওয়া বিবৃতিতে বলে ট্যুরিজম অথরিটি অব থাইল্যান্ড (টিএটি)।
২০১৬ সালে থাইল্যান্ডের তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী দেশে ‘গুণগত মানসম্পন্ন পর্যটন’ বিকাশে বিস্তৃত যৌনপল্লীগুলো উচ্ছেদের ঘোষণাও দিয়েছিলেন; এরপরই থাই পুলিশ রাজধানী ব্যাংককের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায়, যেগুলো যৌন সেবা দিত বলে অভিযোগ।
আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার সঙ্গে থাইল্যান্ডের ক‚টনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে চলতি সপ্তাহে টিএটির এ বিবৃতি এলো। গত মাসে গাম্বিয়ার পর্যটনমন্ত্রী ভ্রমণপিয়াসুদের যৌন কাজ করতে চাইলে পশ্চিম আফ্রিকার ওই দেশে না গিয়ে থাইল্যান্ডে যাওয়ার পরামর্শ দিলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই কথার আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়ে দেশটিতে থাকা গাম্বিয়ার কনসুলার দফতরে পত্রও দেয়।
থাইল্যান্ডে অসংখ্য পানশালা ও গোসলখানা আছে, যেগুলো শেষপর্যন্ত যৌনপল্লীর মতোই পর্যটকদের মনোরঞ্জনে ব্যবহৃত হয় বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ২০১৪ সালে এইএনএইডসের এক প্রতিবেদনে থাইল্যান্ডে সোয়া লাখের মতো যৌনকর্মী আছে বলে জানানো হয়েছিল।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সরকার চাইলেও দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এ যৌনপল্লীগুলো উচ্ছেদ করা সহজ হবে না। সোমবার থাই পুলিশ সমুদ্রতীরবর্তী শহর পাতায়ায় নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য ‘যৌন প্রশিক্ষণ’ পরিচালনা করছে এমন ১০ রুশ নাগরিককে আটকের কথা জানিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া থাইল্যান্ডে কাজ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
‘যৌন পর্যটনের’ সঙ্গে থাইল্যান্ডের গাঁটছড়া এমনই যে স¤প্রতি ব্রেক্সিট ভাষণেও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এ প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছিলেন। পর্যটনশিল্প থেকে গত বছর থাইল্যান্ড রেকর্ড প্রায় ৫৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এ আয় ২০১৬ সালের একই খাত থেকে আয়ের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি।
"