আন্তর্জাতিক ডেস্ক
তুরস্কের আফ্রিন অভিযানে জার্মান ট্যাঙ্কের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক
কুর্দি ওয়াইপিজি গেরিলাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তুরস্ক জার্মানির বানানো লিওপার্ড ট্যাঙ্ক ব্যবহার করছে এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর আঙ্কারায় অস্ত্র রফতানি বন্ধে চাপের মুখে পড়েছে জার্মান সরকার। জার্মান রাজনীতিকরা তুরস্কের কাছে থাকা ট্যাঙ্কগুলো আপগ্রেড করার চুক্তি অনুমোদন বন্ধ রাখারও অনুরোধ জানিয়েছেন বলে খবর বিবিসির। গত শনিবার থেকে দক্ষিণ সীমান্ত লাগোয়া সিরীয় শহর আফ্রিনে ‘অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ’ শুরু করে তুরস্কের সামরিক বাহিনী। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ওয়াইপিজি ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের কথা বলা হলেও আঙ্কারার এই অভিযানের মূল লক্ষ্য কুর্দি গেরিলারাই। অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক ক্ষমতা বিকাশের ক্ষেত্রে কুর্দিদেরকেই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে এরদোয়ান সরকার। তুরস্কের কুর্দিরা আফ্রিনের ওয়াইপিজি গেরিলাদের কাছ থেকে সহায়তা পেয়ে আসছে অভিযোগ তুলে এবার সিরিয়ার ভেতর ঢুকে এ অভিযান চালাচ্ছে আঙ্কারা। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আফ্রিন এবং সিরিয়া উত্তর সীমান্তের চারশ কিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণ রাখা ওয়াইপিজি গেরিলাদের ‘গুড়িয়ে দেওয়ার’ হুংকার দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্ক ও জার্মানির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে অবনতি হলেও সপ্তাহ কয়েক আগে দেশদুটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার মধ্যেই ট্যাঙ্ক নিয়ে এ নতুন বিতর্ক শুরু হলো। জার্মান গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে বার্লিন তুরস্কের একটি অনুরোধে সম্মতি জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে ধারণা দেওয়া হয়। জার্মানির অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রাইনমেটালকে আঙ্কারা তাদের লিওপার্ড টু ট্যাঙ্কগুলোর আপগ্রেডের জন্য অনুরোধ করেছে বলে সেসব প্রতিবেদনে জানানো হয়। ওই আপগ্রেডের মাধ্যমে বিস্ফোরক দ্রব্যের বিরুদ্ধে ট্যাঙ্কগুলোর ঝুঁকি কমিয়ে আনার কথা। সিরিয়ায় আইএস বিরোধী যুদ্ধে তুরস্ক ওই ট্যাঙ্কগুলো ব্যবহার করছে বলে ধারণা করা হলেও সমর বিশেষজ্ঞরা এ সপ্তাহের শুরু থেকে আফ্রিনে কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে চালানো অভিযানের ছবি দেখে সেখানেও লিওপার্ড টু ব্যবহারের কথা জার্মান গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। এরপরই জার্মানির ডান-বাম উভয় দলগুলোর পক্ষ থেকে তুরস্কের ট্যাঙ্ক আপগ্রেড চুক্তি অনুমোদন বন্ধ রাখার দাবি জানানো হয়। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আফ্রিনে তুর্কি বাহিনীর চালানো আগ্রাসনে জার্মান সরকারের অবস্থান কী, তাও স্পষ্ট করতে বলেছে তারা।
জার্মান পার্লামেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান নরবার্ট রটজেন বলেছেন, জার্মানির যে এই আপগ্রেড সুবিধা দেওয়া উচিত নয় তা ‘পুরোপুরি পরিষ্কার’।
"