আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ব্রেইটবার্ট ছাড়ছেন ব্যানন
কট্টর ডানপন্থি সংবাদমাধ্যম ব্রেইটবার্ট নিউজ এজেন্সির শীর্ষপদ ছাড়ছেন হোয়াইট হাউসের সাবেক চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিভ ব্যানন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছেলেকে নিয়ে মন্তব্য করার পর তা নিয়ে বিতর্কের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠান ছাড়লেন ব্যানন, যেখানে থেকেই রক্ষণশীলদের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ব্রেইটবার্ট তাদের নির্বাহী চেয়ারম্যানের পদ ছাড়ার খবর দেয় বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
‘ব্যানন এবং আমরা মসৃণ ও সুশৃঙ্খলভাবে এ পরিবর্তনের ব্যাপার নিয়ে কাজ করছি,’ বলে ব্রেইটবার্ট। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি : ইনসাইড দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউস’ বইতে ডোনাল্ড জুনিয়রকে নিয়ে মন্তব্যের কারণেই ট্রাম্পের সাবেক এ উপদেষ্টার পদত্যাগ, বলছেন পর্যবেক্ষকরা। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে রাশিয়ান আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠক করে ট্রাম্পপুত্র ‘রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’ ও ‘দেশপ্রেমহীন’ কাজ করেছিলেন বলে সাংবাদিক মাইকেল ওলফের লেখা বইতে মন্তব্য করেছিলেন ব্যানন। তার এ মন্তব্য নির্বাচনী প্রচারে রিপাবলিকান শিবিরের সঙ্গে মস্কোর যোগাযোগ নিয়ে তদন্তের পালে নতুন হাওয়া দেয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে গত বছর থেকেই মার্কিন কংগ্রেস ও বিচার বিভাগের তদন্ত চলছে। ট্রাম্প শুরু থেকেই এ ধরনের কোনো সংযোগের কথা অস্বীকার করে আসছেন। মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করা হয়নি বলে বারবার বলছে ক্রেমলিনও।
ব্যাননের মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় হোয়াইট হাউস। ট্রাম্প বলেন, হোয়াইট হাউসের চিফ স্ট্র্যাটেজিস্টের চাকরি হারানোর পর ব্যাননের ‘মাথাটাও গেছে’। ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণেই ব্যাননকে হোয়াইট হাউস ছাড়তে হয়েছিল বলেও ধারণা মার্কিন গণমাধ্যমের। গত বছরের শেষ দিকে রক্ষণশীলদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আলাবামার সিনেট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী রয় মুরের পরাজয়ের পর ব্যানন ও ট্রাম্পের দ্বৈরথ নতুন করে আলোচনায় আসে। বেশ কয়েকজন নারী মুরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করার পরও ব্যানন তাকে সমর্থন দিয়েছিলেন। কয়েক দশক পর আলাবামার দুর্গ হারিয়ে মার্কিন সিনেটেও বেকায়দায় পড়েন রিপাবলিকানরা।
ট্রাম্পপুত্রকে নিয়ে মন্তব্যের কারণে অনেক শীর্ষ রিপাবলিকানও ডানপন্থি এ বুদ্ধিজীবীর কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। গত সপ্তাহে ব্রেইটবার্ট নিউজ এজেন্সির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক রেবেকা মার্সার ট্রাম্পের পক্ষ নিয়ে ব্যাননের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেন।
এরপর কথা ঘোরানোর চেষ্টা করেও পার পাননি হোয়াইট হাউসের সাবেক এ উপদেষ্টা। এ সপ্তাহের শুরুতে এক বিবৃতিতে ব্যানন বলেছিলেন, ওলফের লেখা বইতে তার মন্তব্য সঠিকভাবে উপস্থিত হয়নি। তার ওই মন্তব্য ছিল বৈঠকের সময় ট্রাম্প শিবিরের প্রচার ব্যবস্থাপক পল ম্যানাফোর্টকে উদ্দেশ করে ট্রাম্প জুনিয়রকে নিয়ে নয়।
রাশিয়ানদের সঙ্গে ওই বৈঠকে ট্রাম্পপুত্র ছাড়াও ম্যানাফোর্ট এবং ট্রাম্পের জামাত জারেড কুশনার উপস্থিত ছিলেন। নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই ব্যাননের ব্রেইটবার্ট নিউজ এজেন্সি ছাড়ার ঘোষণা এলো। পদ ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া ব্যানন স্বল্প সময়ে প্রতিষ্ঠানের অর্জন নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন বলে ব্রেইটবার্টের বিবৃতিতে বলা হয়। অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বমানের একটি সংবাদমাধ্যমে গড়ায় ব্রেইটবার্ট টিমের অর্জনে আমি গর্বিত।
‘বিবৃতিতে ব্রেইটবার্টের প্রধান নির্বাহী ল্যারি সোলভ ২০১২ সাল থেকে নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা ব্যাননের প্রশংসা করেন। আমাদের উত্তরাধিকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ স্টিভ, আমাদের অর্জনে তার সহায়তা ও অবদানের জন্য আমরা সব সময়ই কৃতজ্ঞ থাকব,’ বলেন সোলভ।
"