রাজশাহী প্রতিনিধি
এবার রাজশাহীতে পেটে গজ রেখেই সেলাই
পটুয়াখালীতে অস্ত্রোপচারের পর এক নারীর পেটে গজ রেখে সেলাইয়ের ঘটনার জের না কাটতেই রাজশাহীতে এক নারীর পেটে গজ পেয়েছেন অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক নাজমুন নাহার তারা বলেন, ‘স্বাধীনা আকতার শিলা নামে ২২ বছরের এক নারীর পেটে তিনি এ গজ-ব্যান্ডেজ পেয়েছেন। সেটা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়েছে। শিলা এখন ভালো আছে। তাকে হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ নম্বর বেডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
শিলা রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছি ফকিরপাড়া এলাকার হাফিজুর রহমানের স্ত্রী। প্রতিদিনের সংবাদকে তিনি বলেন, ‘গত ১৭ অক্টোবর রাজশাহী শহরের নওদাপাড়া ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে তার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। এরপর থেকে খুব জ্বর হতো। কাটা জায়গায় ব্যথা হতো। কিছু খেলেই বমি হচ্ছিল।’ এরপর তার অবস্থার আরো অবনতি হয় বলে তিনি জানান।
তার বাবা ইদ্রিস আলী মোল্লা বলেন, ‘এরপর শিলাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানকার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ মনোয়ারা বেগম তাকে রাজশাহী শহরের লক্ষ্মীপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল শাখায় আলট্রাসনোগ্রাম করাতে বলেন। সেই প্রতিবেদনে প্রসূতির ডিম্বাশয়ে সংক্রমণের কথা জানানো হয়। গত ৩০ অক্টোবর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচার করেন মনোয়ারা। ৭ নভেম্বর তিনি রোগী সুস্থ বলে ছাড়পত্র দেন। কিন্তু বাড়ি ফেরার পর অবস্থার আরো অবনতি হয়। এরপর ৩ ডিসেম্বর তৃতীয় দফা অস্ত্রোপচার করে শিলার পেট থেকে গজ-ব্যান্ডেজ বের করেন চিকিৎসক নাজমুন নাহার তারা। ঘটনাটি শিলার এক আত্মীয় বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নওদাপাড়া শাখার সার্জন ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সুলতানা নাজনীন রিতা কোনো কথা বলতে চাননি।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন সঞ্জিত কুমার সাহা বলেন, ঘটনা তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার বিকেলে ডেপুটি সিভিল সার্জন এনামুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন চিকিৎসক মনিরা ও তবির। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে এত দিন পরে কমিটি গঠন করা হলো কেন, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি। বুধবার হাইকোর্ট পটুয়াখালীর বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকে ভুয়া চিকিৎসকের ভুল অস্ত্রোপচারের শিকার মাকসুদা বেগম নামে এক নারীকে নয় লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেন। এর মধ্যে অস্ত্রোপচারকারী ভুয়া চিকিৎসক রাজন দাস দেবেন পাঁচ লাখ; বাকিটা দেবে নিরাময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ওই টাকা ভুল অস্ত্রোপচারে ক্ষতিগ্রস্ত বরিশালে মাকসুদা বেগমকে পরিশোধ করতে হবে। বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন।
"