নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ নভেম্বর, ২০১৭

সংলাপে বক্তারা

জাতিসংঘের ভোটের ‘ফল’ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের অগ্রগতি

মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উন্মুক্ত ভোটের ফল রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সফলতা। এতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে এ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর পরীবাগে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে এক জাতীয় সংলাপে সাবেক রাষ্ট্রদূত, বিশিষ্ট কূটনীতিক ও রাজনীতিবিদদের বক্তব্যে এ কথা উঠে আসে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এ জাতীয় সংলাপ যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশন ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড কাউন্টার টেররিজম।

গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উন্মুক্ত ভোটের মাধ্যমে একটি রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়েছে। এতে ১৩৫টি দেশ রেজ্যুলেশনের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে চীন, রাশিয়াসহ ১০টি দেশ। আর ভারতসহ ২৬টি দেশ ভোট দিতে বিরত থাকে। বন্ধুরাষ্ট্র হয়েও চীন ও রাশিয়ার মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দেওয়ার বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. রাশেদ আহমেদ বলেন-স্থায়ী বন্ধু, স্থায়ী শত্রু বিষয়টি পররাষ্ট্রনীতিতে নেই। এখানে কাজ করে জাতীয় স্বার্থ। যেসব দেশ মনে করে এখানে তাদের জাতীয় স্বার্থ রয়েছে, তারা সেটাই করবে। জাতিসংঘের ভোটাভুটিতেও চীন ও রাশিয়া তাই করেছে। এ কারণে আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরো শক্তিশালী করতে হবে।

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভোটাভুটিতে অধিকাংশ দেশ অ?ামাদের পক্ষে। ভারত ভোটদানে বিরত থেকেছে এটাও বড় ধরনের সাফল্য। চীন ও রাশিয়াকে ভোটদানে বিরত রাখতে পারলে নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের অবস্থান সুবিধাজনক হবে। মোটকথা, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে পরিস্থিতি পরিবর্তন হবে।

বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশন ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড কাউন্টার টেররিজমের চেয়ারম্যান ড. ওয়ালিউর রহমান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলার চেষ্টা করছি। প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ কথাগুলো বলুক। আমি আশাবাদী, আমরা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল পাচ্ছি। এ প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলে দ্রুত রোহিঙ্গা সংকট সমাধান হবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনয়েট প্রিফন্টেইন বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। দুই মাস ধরে বাংলাদেশ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। বর্তমানে অনেক দেশ রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে ভাবছে। পরিস্থিতি আগের থেকে উন্নত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা বাংলাদেশকে করব। মিয়ানমার ও বাংলাদেশের উচিত সুসম্পর্ক বজায় রেখে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করা।

এ সময় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নাগরিক সমাজকেও সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি। সংলাপে অন্যান্য বক্তা বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে তা জোরদার করেতে হবে। মিয়ানমারের জনগোষ্ঠী সেই অর্থে জানে না, তাদের দেশে গণহত্যা বা জাতিগত নিধন চালানো হচ্ছে। এ বার্তা তাদের কাছে পৌঁছাতে হবে। রোহিঙ্গারা যে সে দেশের নাগরিক এ জনসমর্থনও নিতে হবে। সবকিছুর ওপর মিয়ানমার প্রতিবেশী দেশ-বিষয়টি মনে রেখে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধান করতে হবে।

সংলাপে আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. মোজাফফর হোসেন পল্টু, মরক্কো দূতাবাসের কর্মকর্তা হামিদ মাশরই, কানাডিয়ান দূতাবাসের কর্মকর্তা জুলিয়া ফ্রান্সিস প্রমুখ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist