ঢাকার তিন হাসপাতাল ঘুরেও সেবা না পেয়ে রাস্তায় সন্তান প্রসব এবং নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় ওই নারীকে কেন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই ঘটনার খবর নজরে নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি মাহমুদ উল্লাহর বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করেছেন, যেখানে ওই নারীকে চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দোষীদের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক বলেন, এই ঘটনা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সভ্যতার ওপর কালিমা লেপন। আমাদের স্বাস্থ্যসেবায় গরীব জনগোষ্ঠী অত্যন্ত নিগৃহীত। তাদের চিকিৎসার অবহেলার যে দৃষ্টান্ত, এক্ষেত্রে আরো সচেতন হতে হবে।

স্বাস্থ্যসচিব, আইজিপি, সমাজকল্যাণ সচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, আজিমপুর শিশু মাতৃসদনের সুপারিনটেনডেন্ট, মাতৃসদনের চিকিৎসক নিলুফার, ঢাকার জেলা প্রশাসক ও লালবাগ থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া ঘটনা তদন্ত করে সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এবং আজিমপুর শিশু মাতৃসদনের সুপারকে ঘটনার তদন্ত

করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আগামী ৫ নভেম্বর এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য দিন রেখেছেন আদালত।

পারভিন আক্তার নামে এক নারী গত মঙ্গলবার প্রসব বেদনা ওঠার পর ঢাকা মেডিক্যাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং সবশেষ আজিমপুর শিশু মাতৃসদনে গিয়েও চিকিৎসা পাননি। পরে রাস্তার ওপরই ওই নারী সন্তান প্রসব করেন, কিন্তু কিছুক্ষণ পরই নবজাতকের মৃত্যু হয়। পরে এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশের হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

আদালত আদেশে বলেন, পারভিন আক্তারের যথাযথ চিকিৎসা এবং তত্ত্বাবধানের অভাবে তার নবজাতকের মৃত্যু হয়। এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, যা আমাদের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সভ্যতার ওপর কালিমা লেপন।

আমাদের স্বাস্থ্যসেবায় গরিব জনগোষ্ঠী অত্যন্ত নিগৃহীত। তাদের চিকিৎসায় সরকার এবং সরকারের সেবা সংস্থাগুলোর অবহেলা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ফলে সরকার ও সেবা সংস্থাগুলোর সচেতন হওয়া আবশ্যক।

"