গাজী শাহনেওয়াজ

  ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার পর এজেন্ডা ঠিক করবে আ’লীগ

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে সংলাপের জন্য আগামী ১৮ অক্টোবর সময় নির্ধারণ হলেও এখনো কমিশনের আমন্ত্রণপত্র দলটির কাছে পৌঁছেনি। গত বৃহস্পতিবার ইস্যু হওয়া আমন্ত্রণপত্রটি আগামীকাল রোববার তাদের হাতে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তাই সংলাপকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক এই দল কী প্রস্তাব দেবে, সেটি চূড়ান্ত হওয়ার তথ্য সঠিক নয়; দলের প্রস্তাবে কী থাকবে-এ বিষয়ে এরই মধ্যে দলটির নেতাদের দেওয়া মতামতকে ব্যক্তিগত বলে জানিয়েছে দলের হাইকমান্ড। সংশ্লিষ্টরা জানান, আমন্ত্রণপত্রটি পাওয়ার পর দলীয় ফোরামে আলোচনা করে দলীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকে সেখানেই এজেন্ডা নির্ধারণ করা হবে।

দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৮ অক্টোবর ইসির সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংলাপটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের দেওয়া মতামতের ওপরে নির্বাচন কমিশনের সংলাপের সফলতা ও ব্যর্থতা অনেকটা নির্ভর করছে। ইসির সংলাপে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রস্তাবে নির্বাচনকালীন সরকারপ্রধান কে হবেন, এ ইস্যুতে দল দুটির অবস্থান কী হবে-এ দিকেই সবার নজর থাকবে। ইতোমধ্যে দল দুটির মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও বাকবিতন্ডা চলে আসছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সব সময় বলে আসছে, অন্তর্বর্তীকালীন কিংবা নিরপেক্ষ সরকার যে পদ্ধতির কথায় উত্থাপন হোন না কেন, দলীয় প্রধান আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অপরদিকে সংসদের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ কয়েকটি দলের দাবি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিংবা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ওই নির্বাচনটি হতে হবে।

তবে আসন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সাংবিধনিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের সংলাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাছে ইসির আমন্ত্রণপত্র না পৌঁছালেও দলের শীর্ষপর্যায়ের নেতারা সংলাপের এজেন্ডার প্রস্তাব নিয়ে বক্তব্য দিতে শুরু করেছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আসলে আমরা তো আমন্ত্রণ জানাইনি, নির্বাচন কমিশন আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমরা আগে তাদের বক্তব্য শুনব। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী আমরা আমাদের প্রস্তাব করব। তবে আমাদের বক্তব্য তো আর ভিন্ন হবে না। নির্বাচন কমিশন যাতে স্বচ্ছ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সেজন্য আমরা প্রস্তাব করব।’ দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে আমরা ই-ভোটিং পদ্ধতির পক্ষে থাকব।’ দলের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকালীন থাকবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অনিবার্য না হলে সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে থাকব। কারণ সেনাবাহিনী দেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করে। যদি পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে সেনা মোতায়েন হবে, অন্যথায় নয়।

সংলাপের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ইতোমধ্যে দলের কয়েকজন নেতার মতামতকে ব্যক্তিগত বলে আখ্যা দিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। তারা বলেন, এখনো সংলাপের আমন্ত্রণপত্রটিও দলের কাছে এসে পৌঁছেনি; তাহলে প্রস্তাব চূড়ান্ত হলো কিভাবে। তবে সংসদ নির্বাচনে ইভিএম রাখা, সেনাবাহিনী ছাড়াও নির্বাচন, নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান থাকবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং ইসির স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করার দাবিগুলো অনেক পুরনো। এ ছাড়া ২০০৮ সালে বির্ন্যাস করা সংসদীয় আসনের সীমানা অনুযায়ীই আগামী নির্বাচন হবে, এটিও ওই দাবিগুলোর একটি।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আমার জানামতে, সংলাপ বিষয়ে দলে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। দলীয় কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়েছিল, ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ থেকে দেশে ফেরার পর এসব বিষয়ে আলোচনা হবে।’ দলীয় নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আবদুল রাজ্জাক ও আবদুল রহমান যেসব কথা বলেছেন সেগুলো পুরনো এবং আগের সিদ্ধান্ত; নতুন কিছু সংযোজন হলে তখন বলা যাবে।’

আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবুল আলম হানিফ এ প্রসঙ্গে বলেন, সংলাপে কী ধরনের প্রস্তাব থাকবে, সেগুলো দলীয় ফোরামে বসে সিদ্ধান্ত হবে। সংলাপের বিষয়ে দলীয় নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো কে কী বলেছে কোনো কথা নয়। এটা কারো ব্যক্তিগত কিংবা ইচ্ছার ওপরে কোনো কথা হবে না। এটা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে। এখনো এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

আর দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বাবলা বলেন, আগামী ১৮ অক্টোবর দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ হবে ঠিক হলেও এখনো কমিশন থেকে তাদের কাছে আমন্ত্রণপত্র এসে পৌঁছেনি। তিনি বলেন, ‘আমি যতটুকু শুনেছি গত (গতকাল) বৃহস্পতিবার চিঠিটি ইস্যু হয়েছে, আশা করছি রোববার প্রথম কর্মদিবসে তা দলের দফতরে এসে পৌঁছাবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist