নিজস্ব প্রতিবেদক
রোহিঙ্গা ফেরতে ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থাপনার প্রস্তাব তথ্যমন্ত্রীর
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থাপনার প্রস্তাব দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের যাচাই সাপেক্ষে ফেরত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি দেওয়ার পর এই প্রস্তাব দিলেন ইনু। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে এক মতবিনিময় সভায় ইনু বলেন, মিয়ানমার সরকার এবং সু চি, বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় পথে বিষয়টাকে রাখতে চাচ্ছেন। বাংলাদেশের জন্য এটা মঙ্গলজনক নয়।
রোহিঙ্গা সংকটকে ‘আন্তর্জাতিক সমস্যা’ আখ্যায়িত করে তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেন, যেহেতু আন্তর্জাতিক সমস্যা, সুতরাং দ্বিপক্ষীয় কোনো সমাধান নয়। এই যে যাচাই-বাছাই করবেন। এখানে যাচাই-বাছাই কে করবেন? এখানে প্রত্যাবর্তন সমস্যাটা ত্রিপক্ষীয়ভাবে করতে হবে-বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও জাতিসংঘ। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ। ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থাপনায় প্রত্যাবর্তন হবে, এই ব্যবস্থাপনায়ই তালিকা হবে, নাগরিকত্ব দিবে, ক্ষতিপূরণ দেবে ও পুনর্বাসন করবে। অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (এটকো) সঙ্গে মতবিনিময় সভায় রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কোনো ধরনের উসকানি না দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যারা সামরিক যুদ্ধের উসকানি দিচ্ছে, তারা রোহিঙ্গাদেরও ক্ষতি করছে, বাংলাদেশেরও ক্ষতি করছে এবং অঞ্চলেরও ক্ষতি করছে। মনে রাখবেন, প্রতিবেশীর ভেতরেই সমস্যা হয়। আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামেও সমস্যা হয়েছিল। বাংলাদেশের উদ্বাস্ত ভারতে গিয়েছিল। ভারত কিন্তু বাংলাদেশে আক্রমণ করেনি বা বাংলাদেশ ভারতকে আক্রমণ করেনি।’
কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে সমাধানে জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আধুনিক বিশ্বে আমি আরেকটি রাষ্ট্র দখল করে রাখতে পারব না। যুদ্ধ করে কিছু এলাকায় ঢুকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে বসিয়ে দিয়ে আসি। আমার সেনাবাহিনী যখন চলে আসবে তখন আবার ওদের (রোহিঙ্গা) বের করে দেবে। এই জায়গাটা আমি কীভাবে হ্যান্ডেল করব-সেই মুন্সিয়ানাটা, সেই কূটনৈতিক বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করতে হবে।’ মিয়ানমারের ভেতরে যেমন, তেমনি বাংলাদেশের মধ্যেও ‘উসকানি’ রয়েছে দাবি করে ইনু বলেন, ‘মাথা ঠা-া রাখতে হবে। সে জন্য বারবার আমরা বলছি, সামরিক সমাধান নয়। কূটনৈতিক তৎপরতা, গণমাধ্যমের ?ভূমিকা ও শেখ হাসিনার শান্তির উদ্যোগ ত্রিমুখী উদ্যোগ।’
সু চির বক্তব্য ‘গ্রহণযোগ্য’ নয় মনে করলেও ইনু বলেন, ‘এতে অন্তত মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার স্বীকৃতি মিলেছে। এটা একটা বিশাল অগ্রগতি। তার মানে কূটনৈতিক তৎপরতারসহ ত্রিমুখী ভূমিকার কারণে সু চি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে নিয়েছে। এই জায়গাটাকে আমি প্রাথমিক অর্জন হয়েছে বলব।’
"