বগুড়া প্রতিনিধি
অবৈধ সুবিধা আদায়
‘ধর্ষক’ তুফানকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর
বগুড়া কারাগার থেকে অবৈধ উপায়ে সুবিধা ভোগকারী ‘ধর্ষক’ তুফান সরকারকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি সেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে বিশেষ ব্যবস্থায় তাকে গাজীপুরে নেওয়া হয়।
২০১৫ সালে বগুড়ার বহুল আলোচিত বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার দেড় হাজার বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হয় র্যাবের হাতে। পরে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। ওই সময় কারাগারের বিভিন্ন জনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তুফান এবার ছাত্রী ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলায় জেলহাজতে যায়। জেলহাজতে গিয়েও বিভিন্ন অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে। অভিযোগ ওঠে-সুস্থ তুফান সরকারকে অসুস্থ দেখিয়ে কারা হাসপাতালে রাখা হয়। তুফান কারা অভ্যন্তরে আরাম-আয়েশে জীবনযাপন করছিলেন। কারাগারের খাবার না খেয়ে বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার খাওয়া, ফেনসিডিল সেবন ছাড়াও উচ্ছৃঙ্খল চলাচল করতেন। গত ১২ আগস্ট দর্শনার্থীকক্ষে তুফানকে ফেনসিডিল খাওয়ানোর সময় এক নারী কারারক্ষী বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে জেল সুপারকে তিনি বিষয়টি জানান। এ ঘটনায় শনিবার সকালে ডিআইজি প্রিজন আলতাফ হোসেন অভিযোগ তদন্তের জন্য বগুড়া কারাগারে আসেন। এরপর দুপুরে তুফানকে বগুড়া থেকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
বগুড়া জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন জানান, শনিবার তুফান সরকারকে বগুড়া থেকে গাজীপুরে স্থানান্তর করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করছেন রাজশাহী বিভাগীয় ডিআইজি প্রিজন আলতাফ হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তি করার কথা বলে কিশোরীকে কৌশলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে তুফান সরকার। এ ঘটনার পর ২৮ জুলাই দুপুরে একই এলাকার পৌর কাউন্সিলর রুমকি ও তার সহযোগীরা বিচারের নামে ওই মেয়ে ও তার মাকে ধরে আটকে রেখে মারপিট করে। পরে মাথা ন্যাড়া করে দেয়। এ খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে তুফান সরকার ও তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করে। এসব ঘটনায় ওই কিশোরীর মা মুন্নি বেগম বাদী হয়ে অপহরণ, ধর্ষণ ও মারপিটের অভিযোগে সদর থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তুফান সরকারের স্ত্রী আশা সরকার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুমকি ও তার মা রুমি, নাপিত জীবন রবিদাসসহ নয়জনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের রিমান্ড শেষে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে তুফানের সহযোগী আতিক ও মুন্না আদালতে ১৬৪ ধারায় কিশোরীর সঙ্গে তার মার মাথা মুন্ডন করে দেওয়ার ঘটনা স্বাীকার করে জবানবন্দি দেন। মা মেয়ের মাথা মুন্ডনকারী নাপিত জীবন রবিদাসও ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
"