চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ১৪ আগস্ট, ২০১৭

২৬ বছর ঝুলে আছে বিচার হুমকিতে পরিবার

মুক্তিযোদ্ধার দুই সন্তানের চোখে গেঁথে দেঢয়া হয় খেজুর কাঁটা। এরপর প্রকাশ্যে চোখে ঢালা হয় এসিড। বর্বর এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়। এ ঘটনার বিচার চেয়ে মামলা করায় লাশ হতে হয় হতভাগ্য বাবা সোবহানকে। ২৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এসিড মামলায় বিচার হয়নি। উল্টো হুমকিতে গ্রামছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারটি। অভিযোগ রয়েছে- মুক্তিযোদ্ধার দুই সন্তানের ওপর বর্বর নির্যাতন করেছিল রাঙ্গুনিয়ায় দুর্ধর্ষ আইয়ুব বাহিনী। এই বাহিনীর প্রধান আইয়ুব যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদেরের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। আদালত সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহানের দুই সন্তান কবির আহমদ ও সবুর আহমদের ওপর চোখে খেজুর কাঁটা ও এসিড ঢেলে নৃশংস নির্যাতন চালায় আইয়ুব বাহিনী। বিচার চেয়ে মামলা করায় ওই বছরের ৩০ অক্টোবর যাত্রীবাহী জিপ থেকে সোবহানকে ধরে নিয়ে যায় আইয়ুব বাহিনী। ১২ দিন পর দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হাত পা ও গলা কাটালাশ পাওয়া যায় মুক্তিযোদ্ধা সোবহানের। সোবহান খুনের মামলায় ২১ আসামির মধ্যে সন্ত্রাসী আইয়ুবসহ ১৭ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়। তবে সোবহানের দু’সন্তানের চোখ উৎপাটন করে এসিড দেওয়ার মামলা দুই যুগের বেশি সময় ধরে ঝুলে আছে। এ ঘটনায় আইয়ুব বাহিনীর আইয়ুবসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ১৯৯৩ সালের ১৬ আগস্ট বিচার শুরু হয়। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- আবুল হাশেম, আবদুল হক, আবদুল ছালাম, জাহাঙ্গীর, ইব্রাহীম, সোলেমান, গোলাম কাদের, রশিদ আহমদ, মকবুল হোসেন, জাফর, তছলিম, আবুল হাসেম। এসিড দগ্ধ মুক্তিযোদ্ধার দুই সন্তানকে পাঁচ বছর বিভিন্ন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়। এরপরও তাদের উন্নতি না হওয়ায় লন্ডনে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসার জন্য এক লাখ টাকা আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ ২৬ বছর ধরে এ মামলার রায়ের জন্য অপেক্ষায় আছেন এসিড দগ্ধ ভুক্তভোগী কবির ও সবুরের ভাই বাদী ফরিদুল আলম।

তিনি বলেন, ‘আমার দুই ভাইয়ের ওপর নির্যাতনের বিচার চাইতে গিয়ে খুন হন আমার বাবা। আমাকেও অপহরণ করে আইয়ুব বাহিনী। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাও বিচারাধীন আছে। প্রাণ ভয়ে আজ ২৬ বছর ধরে রাঙ্গুনিয়ার নিজ গ্রামে যেতে পারি না আমরা।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার বাবা খুনের মামলায় তাদের সাজা হয়েছে। কিন্তু তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে এসেছে। এ ছাড়াও একাধিক খুন, এসিড নিক্ষেপ, অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৪ থেকে ১৫টি মামলা রয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে থানায় সাজার পরোয়ানাও আছে। তারপরও তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’

আলোচিত এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী লোকমান হোসেন বলেন, ‘এ পর্যন্ত আদালতে ৩১জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ৫ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নুরে আলমের আদালতে এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist